রমনা বটমূলে হামলা, ২৪ বছরেও শেষ হয়নি বিচার

রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলেও বিস্ফোরক আইনের মামলাটি দীর্ঘ ২৪ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পরও গত তিন বছর ধরে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি না হওয়ায় বিচারকার্য এখনো আটকে আছে।
বিস্ফোরক আইনের মামলাটি বর্তমানে ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সাইফুর রহমানের আদালতে বিচারাধীন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় আসামি আরিফ হাসান সুমনের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য থাকলেও পূর্বের ধারাবাহিকতায় শুনানি স্থগিত করে আগামী ২০ এপ্রিল নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন বিচারক।
আদালতের নথি অনুযায়ী, বিস্ফোরক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ২০২২ সালের ২১ মার্চ সম্পন্ন হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। ওই বছরের ৩ এপ্রিল সাতজন আসামি নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। তবে অন্যান্য আসামিরা পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি। একই দিনে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে আসামি আরিফ হাসানের আইনজীবী মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ন্যায়বিচার হলে তার মক্কেল খালাস পাবেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিনা বিচারে আসামিকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটকে রাখার উদ্দেশ্যেই মামলার বিচার বিলম্বিত করা হচ্ছে। একজন আসামির আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য একটি বা দুটি তারিখ যথেষ্ট হলেও তিন বছরের বেশি সময় ধরে শুনানি পেছানো হচ্ছে। একই সঙ্গে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে নিয়মিতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে না।
অন্যদিকে, আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজ হাসান জানান, তিনি গত অক্টোবরে নিয়োগ পেয়েছেন। ডিসেম্বরে আদালতের অবকাশ ছিল। তাই তারা খুব বেশি সময় পাননি। তিনি রাষ্ট্রীয় দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন এবং পাবলিক প্রসিকিউটরের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় ১০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং অপর ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে করা মামলার আসামিরা হলো- মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সী ওরফে আবুল কালাম ওরফে আবদুল মান্নান, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন ওরফে হেলালউদ্দিন, মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, হাফেজ আবু তাহের, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ ও হাফেজ ইয়াহিয়া।