এমবিবিএস সনদ নেই, জটিল রোগের চিকিৎসায় করেন সার্জারিও

বরিশালের উজিরপুরে সনদ না থাকা সত্ত্বেও নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার দাবি করার অভিযোগ উঠেছে রেজাউল করিম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভুয়া পরিচয়ে তিনি জটিল সব রোগের চিকিৎসা দেন এবং সার্জারিও করেন।
স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, রেজাউল করিমকে কখনও আবার সুযোগ বুঝে সাংবাদিক পরিচয়, আবার কখনও টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক, ঢাকা ও বরিশাল শহর থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার মালিক-প্রকাশক হিসেবেও পরিচয় দিতেও দেখা গেছে। সর্বশেষে তিনি উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সীমান্তবর্তী ও কোটালীপাড়া উপজেলার পূর্ব-দক্ষিণ সীমান্তের পশ্চিম সাতলা গ্রামে গড়ে তুলেন ‘মায়ের দোয়া ক্লিনিক অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার’। ওই সেন্টারে বসেই বছরের পর বছর ধরে গ্রামগঞ্জের সহজ সরল রোগীদের অপচিকিৎসা করছেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, ওই ক্লিনিকে রোগীদের ভর্তির পরে চিকিৎসা প্রদান বা জটিল অপারেশন করার তথ্য ডায়েরি বা রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেন না রেজাউল করিম। এতে তার কাজের কোনো প্রমাণ থাকে না। রোগীদেরকেও কোনো প্রমাণপত্র দেওয়া হয় না। বরিশালের ১০ উপজেলায় তার অপচিকিৎসায় গত দুই বছরে অন্তত ছয়জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তার সনদপত্রে লেখা-‘চার্টার অব অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অব ইন্ডো অ্যালোপ্যাথি অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন’। কিন্তু অনুসন্ধান করে এই নামে সনদপত্র প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠান পাওয়া যায়নি।
এমবিবিএস চিকিৎসক হিসেবে ভুয়া পরিচয়দাতা মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি কেবল প্রাথমিক চিকিৎসা দেই। যেগুলো আমার দ্বারা সম্ভব।’
উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শওকত আলী বলেন, ‘তিনি ভারতের একটি সনদপত্র দেখান। এটা কোন জায়গা থেকে নিয়েছেন, সেটার বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। এটার কোনো বৈধতা নেই। তার যেহেতু এমবিবিএসের সনদ নেই, তাই তার দেখানো এসব ডিগ্রির কোনো দাম নেই।’
উজিরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলী সুজা বলেন, ‘রেজাউল করিমকে আমরা নজরদারিতে রাখছি। আমরা খুব দ্রুতই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’
বরিশালের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার সব্যসাচী দাস বলেন, ‘ওনার যে ডিগ্রিগুলো দেখান, সেখানে বিএমডিসির স্বীকৃত কোনো ডিগ্রি নেই। ফলে তিনি ডাক্তার লিখতে পারবেন না এবং কোনো রোগীকে তিনি চিকিৎসা দিতে পারবেন না।’