চাঁনখারপুলে গণহত্যা : চার পুলিশ সদস্য ট্রাইব্যুনালে

জুলাই-আগস্টে চাঁনখারপুলে গণহত্যার অভিযোগের মামলায় পুলিশ পরিদর্শক আরশাদ এবং কনস্টেবল সুজন, ইমন ও নাসিরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে তাদের কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার তদন্ত সংস্থা থেকে এই মামলার প্রতিবেদন পেয়েছে প্রসিকিউশন। আজ ট্রাইবুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের কথা থাকলেও প্রতিবেদনটি নিজেদের মধ্যে বিশ্লেষণ করতে আরও সময় আবেদন করবে বলে জানা গেছে।
ওই তদন্তে উঠে এসেছে, পলাতক আসামি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা সরাসরি এবং অধীনস্থদের নির্দেশ প্রদান, সহযোগিতা ও সহায়তার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনে ভূমিকা রাখেন।
এ ছাড়া তারা এসব অপরাধ সংঘটন থেকে অধীনস্থদের বিরত রাখেননি বা পরবর্তী সময়ে কোনো ব্যবস্থাও নেননি। এসব কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য।
এ বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, অপরাধের ঘটনার সময়কাল ছিল ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট। ৯০ পৃষ্ঠার এ তদন্ত প্রতিবেদন ১৯৫ দিনের তদন্ত শেষে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় চারজন গ্রেপ্তার রয়েছেন। তারা হলেন—পরিদর্শক আরশাদ, কনস্টেবল মো. সুজন, কনস্টেবল ইমাজ হোসেন ইমন ও কনস্টেবল নাসিরুল ইসলাম। এ ছাড়া পলাতক রয়েছেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আরও কয়েকজন।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, ঢাকা মহানগরীর চাঁনখারপুল এলাকায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।
তদন্তে উঠে এসেছে, পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য আসামিরা ঘটনাস্থলে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন অথবা তা তত্ত্বাবধান করেছেন। তারা অধীনস্থদের নির্দেশ প্রদান, সহযোগিতা ও সহায়তার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটনে ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়া তারা এসব অপরাধ সংঘটন থেকে অধীনস্থদের বিরত রাখেননি বা পরবর্তী সময়ে কোনো ব্যবস্থাও নেননি।
তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোট ৭৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সংযুক্ত আছে ১৯টি ভিডিও, ১১টি পত্রিকার প্রতিবেদন, দুটি অডিও, ১১টি বই ও রিপোর্ট এবং ছয়টি মৃত্যু সনদ।