চট্টগ্রামে নির্মাণ হতে যাচ্ছে আরেকটি ৫০০ শয্যার হাসপাতাল। সরকারের পক্ষ থেকে  ইতোমধ্যে জমি নির্ধারণের জন্য একাধিক স্থান পরিদর্শনও করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওপর চাপ কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কর্ণফুলী উপজেলার ক্রসিং এলাকার নতুন উপজেলা ভবনের পাশে খলিল মীর কলেজ সংলগ্ন জায়গা পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, হাসপাতালটি নির্মিত হলে শুধু কর্ণফুলী উপজেলা নয়, পার্শ্ববর্তী অন্তত তিনটি উপজেলার জনগণসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যসেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পরিদর্শনকালে হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা মূল্যায়ন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন নূরজাহান বেগম। একই সঙ্গে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও অগ্রগতির বিষয়েও দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

এর আগে গত ১৬ মার্চ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিণখাইন এলাকায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশের জায়গা পরিদর্শন করেন। সে সময় আইডিয়াল স্কুল থেকে এক একর ও স্থানীয় ব্যক্তি পর্যায়ে এক একর জায়গা প্রদানের কথা জানানো হয়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালের জন্য খুঁজছিল ১০ একর জায়গা।

এসময় সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি নির্দেশনা মতে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ১০ একর জায়গা দরকার। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সম্ভাব্য জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন। সরকার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই হাসপাতালটি নির্মাণে আগ্রহী। তাই কাজ দ্রুত শুরু করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই হাসপাতাল নির্মিত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা পাবে।

পরিদর্শনকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ডা. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. অং সুই প্রু মারমা, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রয়া ত্রিপুরা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, দুই হাজার ২২২ শয্যার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন হাজার ৩০০ রোগী ভর্তি থাকেন। হাসপাতালের সক্ষমতার তুলনায় হাজারেরও বেশি রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয়। চট্টগ্রামের বাইরেও কক্সবাজারসহ তিন পার্বত্য জেলার বাসিন্দাদের চিকিৎসাসেবার জন্য এই হাসপাতালের উপর নির্ভর করতে হয়।

কিন্তু চমেক হাসপাতালে পৌঁছাতে তিন পার্বত্য জেলা ও কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। যাতায়াত সময়সাপেক্ষ হওয়ায় মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই অনেক সময় মারা যান। এ অবস্থায় চমেক হাসপাতালের চাপ কমিয়ে বান্দরবান-কক্সবাজারসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে নতুন হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালটি নির্মাণ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ উপকৃত হবে।