হিট স্ট্রোকে মরেছে ৩০ হাজার মুরগি, খামারিদের লোকসান ৭০ লাখ

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় গত ১৫ দিনে হিটস্ট্রোকে প্রায় ৩০ হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে উপজেলার প্রায় ৬০০ খামারি আনুমানিক ৭০ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
উপজেলার মহিষমারী এলাকার মা পোলট্রি ফার্মের মালিক লিটন হোসেন জানান, তার খামারে গত এক মাসে তীব্র গরম ও হিট স্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগে প্রায় ১৫ হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে তার লোকসান হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। বারবার এমন ক্ষতির মুখে পড়লেও তিনি কোনো সরকারি প্রণোদনা বা আর্থিক সহায়তা পাননি। এই অবস্থায় অনেক তরুণ উদ্যোক্তা খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
আরেক খামারি মোশারফ হোসেন বলেন, তার খামারে গত ৩ দিনে হিটস্ট্রোকে ৪০০ মুরগি মারা গেছে। পাশের একটি খামারে মারা গেছে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মুরগি। এতে তার ক্ষতি প্রায় ১ লাখ টাকা এবং প্রতিবেশীর প্রায় ৩ লাখ টাকা। সরকারি প্রণোদনা পেলে তারা আবারও খামার চালু করতে পারতেন বলে জানান তিনি।
এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে সিংড়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি খামারে। প্রতিদিন শত শত মুরগি মারা যাচ্ছে তীব্র গরমে। মুরগি রক্ষা করতে খামারিরা টিনের ছাদে কৃত্রিম ঝর্ণার ব্যবস্থাও নিয়েছেন, কিন্তু তাতে বিশেষ সুফল মিলছে না।
খামারি সোহাগ রানা বলেন, তার খামারে দশ হাজার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২০০-৩০০টি মুরগি মারা যাচ্ছে। প্রতিটি মুরগির ওজন এক থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। পাইকাররাও ভয় পাচ্ছেন, কারণ পরিবহণের সময় অনেক মুরগি মারা যাচ্ছে। ফলে ৭০-৮০ টাকা কম দামে মাইকিং করেও তিনি আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছেন না।
সিংড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাসরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় মোট ৬০০টি খামার রয়েছে যেখানে ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালি ও দেশি জাতের মুরগি পালন করা হয়। তার দপ্তরের হিসেবে, সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহে প্রায় ১০ হাজার মুরগি মারা গেছে। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
তাসরিফুল ইসলাম আরও বলেন, যদি সরকারি প্রণোদনা বরাদ্দ দেওয়া হয়, তবে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহযোগিতা করা সম্ভব হবে।