সাম্যর গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যর (২৫) গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সাম্যের আকস্মিক মৃত্যুতে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে আজ বুধবার (১৪ মে) সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছে মরদেহ শেষবারের মতো দেখতে। গ্রামের বাড়িতে কখন তার মরদেহ পৌঁছাবে, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা। তাকে দাফন করার জন্য সরাতৈল জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে কবর প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
নিহত ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য সরাতৈল গ্রামের ফরহাদ সরদারের ছেলে। কয়েক বছর আগে তার মা মারা গেছেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় বাস করেন। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে পরিবার জানতে পারে যে সাম্যকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খুন করা হয়েছে।
আজ এশার নামাজের পর বেলকুচি উপজেলার সরাতৈল মসজিদ ও মাদ্রাসা মাঠে সাম্যর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
সাম্যের বড় চাচা ডা. কাউসার আলম বলেন, সাম্যরা ঢাকাতেই থাকত। ঈদ ও বিশেষ কোনো অনুষ্ঠানে তারা গ্রামের বাড়িতে আসত। রাত ১টার দিকে তারা জানতে পারেন সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। তার ভাতিজা ভালো ছাত্র ছিল। মা-হারা ছেলেটির কী অপরাধ ছিল, তা তিনি জানেন না। তিনি হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর আলম বলেন, সাম্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। সে এলাকার কৃতি সন্তান ও মেধাবী ছাত্র ছিল। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। একজন মেধাবী ছাত্রের এমন হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এদিকে, ছাত্রদল নেতা সাম্যর হত্যার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে প্রতিবাদ মিছিলটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় অন্য একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা সাম্যকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।