অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। আজ শনিবার (২৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ঐতিহাসিক মধু ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ উসমান হাদী এ আহ্বান জানান।
শরিফ উসমান হাদী বলেন, ‘আসন্ন কয়েক মাসের মধ্যে বিচার, মৌলিক সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিন মূল দাবির ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। এই সরকার হবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে।’
শরিফ উসমান হাদী আরও বলেন, ‘বিএনপি বা জামায়াত জাতীয় সরকার গঠনের পথে বাধা সৃষ্টি করলে, তাদের জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’ সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রস্তাব করেন, ‘এই (জাতীয়) সরকারের মেয়াদ হবে কমপক্ষে ১০ মাস থেকে এক বছর এবং জুলাইয়ে নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা থাকলেও, সেটি নির্ভর করবে সরকারের কার্যক্রম ও জাতীয় ঐক্য গঠনের অগ্রগতির ওপর।’
জাতীয় সরকার গঠন সম্ভব না হলে ‘জাতীয় ঐক্য কাউন্সিল’ গঠনের প্রস্তাব দেন ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র। প্রস্তাবিত এই কাউন্সিলের প্রধান হিসেবে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মুখপাত্র শরিফ উসমান বলেন, এই কাউন্সিল হবে একটি ‘ওয়াচডগ’ প্রতিষ্ঠান, যার সদস্যরা মন্ত্রিসভার মতো সাংবিধানিক মর্যাদা পাবে, তবে তারা মন্ত্রী বা উপদেষ্টা হিসেবে নয়, বরং পর্যবেক্ষক হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে শরিফ উসমান হাদী বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ কার্যকর না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কোনো লাভ হবে না। তবে, ঘোষণাপত্র সাংবিধানিক স্বীকৃতি পেলেই তখন আওয়ামী কার্যক্রম নিষিদ্ধ হতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের কিছু আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শরিফ উসমান হাদী। তিনি বলেন, ‘মন চাইলেই পোস্ট দেন, আবার তিন ঘণ্টা পর ডিলিট করেন। পরে ক্ষমাও চান। আবেগ থাকলে নাটক করুন, আর্ট করুন, উপদেষ্টা কেন হবেন?’
মুখপাত্র শরিফ উসমান সতর্ক করে বলেন, “বিচার ও মৌলিক সংস্কার ছাড়া যদি ‘ইউনূস সরকার’ কেবল নির্বাচনের দিকে এগোয়, তাহলে দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।