‘ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব—এই আলোচনাও হয়েছে’

আগামী বছরের জুন নয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব, এমন আলোচনাও হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আজ শনিবার (২৪ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আমীর খসরু। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘মূলত সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন—এই তিনটার ওপর আলোচনা হয়েছে। সংস্কার কাজ অতি দ্রুত সম্পন্ন হবে। এখানে কোনো দ্বিমত করেননি। বিচারের কাজ বিচার বিভাগ করবে। বিচারের আওতায় আনার ব্যাপারে যে আলোচনা হয়েছে, এখানে ওনাদের কোনো দ্বিমত নাই। সুতরাং, ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব—এই আলোচনাও হয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের লক্ষ্যে বিএনপি প্রথম থেকেই একটি একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করে আসছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে সরকারের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।’
ড. মোশাররফ আরও বলেন, ‘নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সংস্কার কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দ্রুত রোডম্যাপ প্রদানের আমরা দাবি জানাচ্ছি। বাংলাদেশের মানুশ বিশ্বাস করে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা। যেকোনো উছিলায় নির্বাচন যত বিলম্ব হবে আমরা মনে করি জাতির কাছে আবার স্বৈরাচার ফিরে আসার একটা ক্ষেত্র প্রস্তুত হবে। এর দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ওপর বর্তাবে।’
তিন জন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবির বিষয়ে বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপিনেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগের ব্যাপারে আমরা লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছি, আগেও জানিয়েছি। নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং দুজন ছাত্র উপদেষ্টা—তাদের কারণে এই সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাদেরকে বাদ দেওয়ার জন্য আমরা আজও লিখিত বক্তব্যে দিয়েছি, মুখেও বলেছি।’
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা কোনো আশ্বাস দিয়েছেন কিনা—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘সেই আশ্বাস ওনারা দেখবেন। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি।’
বৈঠকে অংশ নেওয়া দলটির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনটি বিষয়ে (সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন) আলোচনা হয়েছে। একটার সঙ্গে আরেকটা কোনো সম্পর্ক নেই। যদি দ্রুত নির্বাচন দেওয়া হয়, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলেছি—আজকে বাংলাদেশে যে নৈরাজ্য হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, এক ঘোষণার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ও গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’