হত্যা ষড়যন্ত্রসহ চাঁনখারপুলে জুলাই গণহত্যার অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল

জুলাই আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় রাজধানীর চাঁনখারপুলে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ আটজনের অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগে দাখিল করা হয়। রাইফেল দিয়ে হত্যা, ষড়যন্ত্র, সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
একইসাথে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। অপর সাত আসামির বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পরবর্তী শুনানির জন্য ৩ জুন দিন ধার্য করেছেন আদালত। এর আগে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, এর মধ্য দিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই বিপ্লবের প্রথম মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলো। আজ রোববার (২৫ মে) এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ছাত্র-জনতার চলমান গণআন্দোলনের মধ্যে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের গুলিতে আনাস নিহত হন।
গত ২০ এপ্রিল এই মামলায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সেই প্রতিবেদন আজ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করা হবে। এর মধ্য দিয়েই আনাস হত্যা মামলার বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা ঘটবে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আলম ও মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে শেষের চারজন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন, বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট চানখাঁরপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলি চালায়। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সদস্যরা এই অভিযানে সরাসরি অংশ নেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্দোলন দমন করতে ব্যবহার করা হয় আগ্নেয়াস্ত্র, এপিসি কার, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও বিপুল পরিমাণ বুলেট। পুলিশের এই অভিযানে নিহত হন শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানসহ অন্য অভিযুক্তরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং অধীনস্তদের গুলি চালানোর নির্দেশ দেন। তাদের সহযোগিতা ও নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।