নির্মাণের ছয় মাসেই গাইড ওয়ালে ফাটল, নদী ভাঙনের শঙ্কায় ২০০ পরিবার

নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে খলশিডাঙ্গা নদীর পাড় রক্ষায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গত বছর কোটি টাকা ব্যয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করেছিল। তবে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী, রড-সিমেন্ট কম দেওয়াসহ নানা অনিয়মের কারণে মাত্র ছয় মাসেই ওয়ালে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। এতে এলাকার প্রায় ২০০টি পরিবার নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রকৌশলীদের গাফিলতি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের যোগসাজশে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ফলে টিকল না কোটি টাকার গাইড ওয়াল। এখন বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি তোলা হচ্ছে ওয়াল ও সড়কের ফাঁকা স্থান ভরাট করতে। এতে ক্ষতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীতে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে খননযন্ত্র (ভেকু) ব্যবহার করে মাটি তোলা হচ্ছে এবং সেই মাটি ওয়ালের ফাঁকা অংশে ফেলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কেশবপুর গ্রামের আঞ্চলিক সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীভাঙনের শঙ্কায় পড়েছে অনেকের ঘরবাড়িও।
স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম আলী ও মাহফুজুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রকৌশলীরা অনিয়ম করে গাইড ওয়াল নির্মাণ করেন। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কিছুদিন পরই ফাটল দেখা দেয়। আমরা দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা চাই।
প্রকল্পের ঠিকাদার গোলাপ আলী জানান, প্রকল্পের কাজ বিভিন্ন ঠিকাদার সম্পন্ন করেছে। প্রকৌশলীর নির্দেশেই নদী থেকে মাটি তোলা হচ্ছে।
বিএমডিএ’র লালপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল বাসার অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, গত বর্ষায় সময় স্বল্পতার কারণে ওয়ালের ব্যাক সিলিংয়ে মাটি দেওয়া হয়নি। এখন দেওয়া হচ্ছে। নদী থেকেই মাটি তোলা হচ্ছে। তবে প্রকল্পের বরাদ্দ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।
বিএমডিএ’র বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়গুলো উপ-সহকারী প্রকৌশলী দেখেন। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।