বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ শুক্রবার (৩০ মে)। জাতীয় জীবনে দিনটি খুবই শোকাবহ। ১৯৮১ সালের ৩০ মে’র এই কালরাতে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে ঘুমন্ত অবস্থায় দেশি-বিদেশি ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের ক্রীড়নক কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন জিয়াউর রহমান বীর উত্তম।

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আজ প্রাণপ্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর অশ্রুসিক্ত নয়নে স্মরণ করবে দেশের মানুষ। এ উপলক্ষে শেরে বাংলানগরের জিয়া উদ্যানে শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত, কোরআন তিলাওয়াত, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, আলোচনা সভা, কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।

জাতির ক্রান্তিকালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্ব ছিল অবিস্মরণীয়। তিনি সকল সংকটে দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধের ময়দানে বীরোচিত ভূমিকা এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে তাঁর অনবদ্য অবদান জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে।

স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সততার প্রতীক ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রারম্ভে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ যখন দিশেহারা ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬শে মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে মেজর জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উজ্জীবিত করেছে। এই ঘোষণায় দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ মরণপণ যুদ্ধে শামিল হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে জাতি বিদেশি শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে বিজয় অর্জনের অব্যবহিত পরে স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর দুর্বিনীত দুঃশাসনে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা ও কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র মাটিচাপা পড়ে। একের পর এক দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা হরণ করা হয়, দেশ একদলীয় সামন্ততান্ত্রিক শাসনের নিষ্ঠুর কবলে পড়ে পিষ্ট হতে থাকে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করে মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়। সেই সময় দেশের সর্বত্র বীভৎস অরাজকতা নেমে আসে। গণতন্ত্র হত্যা ও অরাজকতার অমানিশার দুর্যোগের মুখে দেশের সিপাহী-জনতা মিলিত শক্তির মিছিলে জিয়াউর রহমান জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন। ফিরিয়ে দেন বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং সংবাদপত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা। তিনি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করেন। উৎপাদনের রাজনীতির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেন। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির অবস্থা থেকে খাদ্য রপ্তানিকারক দেশে পরিণত করেন। আধুনিক ও স্বনির্ভর দেশ গঠনের পদক্ষেপ নেন। বিগত সরকার তাঁর নাম পাঠ্যপুস্তকসহ সকল স্থাপনা থেকে মুছে ফেলেছিল। কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এদেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। তাঁর নাম কোনো দিন মুছে ফেলা যাবে না ।

আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্রান্তিকালে বিদ্রোহী কবির ধুমকেতুর মতোই ত্রাতার ভূমিকায় জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব ঘটেছিল। তিনি একজন সৈনিক থেকে ক্রান্তিকালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ, যুদ্ধ শেষে সেনাবাহিনীতে ফিরে যাওয়া, ক্রান্তিকালে দেশের দায়িত্বগ্রহণ, সর্বোপরি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে এদেশের সমৃদ্ধির প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। জিয়াউর রহমানের সততা ও দেশপ্রেম ছিল সকল প্রশ্নের ঊর্ধ্বে ও ঈর্ষণীয়। তার সততা নিয়ে তার চরম শত্রুও কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। একজন সাধারণ মেজর হয়েও ১৯৭১ সালের বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে আজো দেশবাসীর হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন।

দেশদরদী এই মহান নেতা ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়া জেলার নিভৃতপল্লী বাগবাড়ির এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব ও কৈশোরে তিনি কমল নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর পিতা মনসুর রহমান সরকারি চাকরির জন্য প্রথমে কলকাতায় ও ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর করাচি শহরে অবস্থান করায় সেখানেই তার লেখাপড়া। শিক্ষাজীবন শেষ করে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। পাক-ভারত যুদ্ধে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসাবে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তিনি এই যুদ্ধে কোম্পানির সর্বোচ্চ খেতাব ও একটি বিশেষ উপহার লাভ করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে হানাদার পাকবাহিনী মারণাস্ত্র নিয়ে  হঠাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ নিরস্ত্র ঘুমন্ত মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে নিহত হয় হাজার হাজার মানুষ। হানাদারদের অতর্কিত আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ। চট্টগ্রামে অবস্থানরত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান এ রাতেই ষোলশহরে সেনাবাহিনীর ৮ম ব্যাটালিয়নের সব বাংলাভাষী অফিসার ও জওয়ানকে ডেকে একত্র করে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ডাক দেন। মেজর জিয়ার এই আহ্বানে গোটা অষ্টম ব্যাটালিয়নে ব্যাপক সাড়া দিয়ে সৈনিক ও অফিসাররা উল্লসিত হয়ে ওঠে। পাকবাহিনীর আক্রমণে নিরস্ত্র জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে ২৬ মার্চ মেজর জিয়া চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির উদ্দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। মেজর জিয়ার কণ্ঠস্বর শুনে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে দিশেহারা গোটা জাতি। 

জিয়াউর রহমান শুধু মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হননি। তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় তিনি চৌকস জেড ফোর্স গঠন ও পরিচালনা করেন। বীরত্বের সঙ্গে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর আবার ফিরে যান ক্যান্টনমেন্টে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক ক্ষমতা দখল করে প্রেসিডেন্ট হলে সেনাবাহিনীসহ গোটা জাতির ভাগ্যোন্নয়নে তখন বিরাজ করছিল চরম অনিশ্চয়তা। এরই মধ্যে খন্দকার মোশতাককে পাল্টা আরেক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত করে আধিপত্যবাদের ক্রীড়নকরা ক্ষমতা দখল করে। সেসময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় নেতৃত্বশূন্য জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যে জিয়াউর রহমানকে দায়িত্ব দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয় সৈনিক-জনতা। দেশের নেতৃত্ব গ্রহণের পর জিয়াউর রহমান অল্প সময়ের মধ্যেই তলাবিহীন ঝুড়ির বদনামমুক্ত করে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করেন। তিনি একদলীয় শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে দেশে বাক-ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের কালজয়ী দর্শনের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান জাতির নিজস্ব পরিচয় তুলে ধরেন। তার অন্যতম উপহার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। তার সুশাসনে উদীয়মান এক অমিত সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় আসন লাভ করে।

জিয়াউর রহমান ছিলেন সমৃদ্ধ এবং উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও পথ-প্রদর্শক। তিনি বাংলাদেশকে অধিকতর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিতে দেশের সম্ভাবনার প্রতিটি দিককে উন্মোচনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত সততা, পরিশ্রমপ্রিয়তা, কর্তব্যনিষ্ঠা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা, নির্লোভ, নির্মোহ ও গভীর দেশপ্রেমসহ বহু সৎগুণাবলী দিয়ে তিনি জাতির সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে এক নতুন জাগরণ সৃষ্টি করেন। স্বেচ্ছাশ্রমে খাল খনন, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি দেশগড়ার ১৯দফা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যেই জনগণের নয়নের মণি হয়ে ওঠেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তাঁর বলিষ্ঠ, গতিশীল ও পরিকল্পিত নেতৃত্বে দেশ সত্যিকার উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিছুদিনের মধ্যেই দেশবাসীর প্রাণপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় ঠাঁই করে নেন। মুসলিম বিশ্বে, জোটনিরপেক্ষ বলয়ে ও পাশ্চাত্যে তেজদীপ্ত ও প্রজ্ঞাবান রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে ভূমিকা পালনে, সার্কের সফল স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে শহীদ জিয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের অগ্রভাগে এনে দিয়েছিলেন। জিয়ার ঈর্ষণীয় এই জনপ্রিয়তা ও দেশপ্রেমই তার জন্য কাল হয়েছিল। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা চট্টগ্রামে তাকে হত্যা করলেও তার আদর্শকে হত্যা করতে পারেনি। ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমানের শাহাদাতে গোটা পৃথিবী শোকাভিভূত হয়ে পড়েছিল। এ  শোকের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল শেরেবাংলানগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জানাজায়। লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে সেদিন জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল।

বিএনপির চেয়ারপারসনের বক্তব্য

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, প্রতি বছর মে মাসের এই দিনটি আমাদের পরিবারে আসে এক বেদনাবিধুর স্মৃতি নিয়ে। এই দিনে শুধু আমাদের পরিবার নয়, সমগ্র দেশ হয়ে উঠেছিল বেদনার্ত ও অভিভাবকহীন। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িয়ে থাকা এক অবিচ্ছেদ্য নাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যে চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা করে তিনি এ দেশের সাথে তাঁর নাম অবিচ্ছেদ্য করেছিলেন, সেই চট্টগ্রামেই এক সফল, সৎ, দূরদর্শী ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দলীয় আলোচনাসভায় একথা বলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর প্রথমবারের মতো বেগম খালেদা জিয়া কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।

খালেদা জিয়া আরও বলেন, এদেশে গণতন্ত্র, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও উন্নয়ন, নিজস্ব জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির অনন্য রূপকার শহীদ জিয়া। যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন, সেই গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন যাত্রা আজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রতি পদে পদে। খুব শিগগিরই আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা দেখতে পাব— এই হোক শহীদ জিয়ার শাহাদাতবার্ষিকীতে আমাদের অঙ্গীকার।

বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, মনে রাখবেন, সবার জন্য গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মাধ্যমে সকল সমস্যা সমাধানের যে রাজনীতি শহীদ জিয়া রেখে গেছেন তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 
এসময় শহীদ জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্র চিন্তা থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক নেতৃত্বের জন্য একটা বার্তা আছে। কী সেই বার্তা ? রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল হতে হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থকে সবার আগে বিবেচনায় আনতে হবে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে শহীদ জিয়ার প্রতিটি সৈনিক, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিটি কর্মীকে আমার আহ্বান, আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন। জনগণকে অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।

বিএনপি মহাসচিবের বাণী

শহীদ জিয়াউর রহমানের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাণী দিয়েছেন। তিনি  বাণীতে শহীদ জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের প্রারম্ভে সারা জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, অথচ রাজনৈতিক নেতৃত্বের দ্বিধা ও সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা, ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়ার কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। ফলশ্রুতিতে দেশের তরুণ, ছাত্র, শ্রমিক, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। 

বিএনপির কর্মসূচি 

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আট দিনের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। ২৫ মে  থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। আগামী ৩ জুন পর্যন্ত এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে-  শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে পোস্টার প্রকাশ ও কালো ব্যাজ ধারণ। সংবাদপত্র ও অনলাইন পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও পোস্টার প্রকাশ। শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীর রমনাস্থ ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

আজ শুক্রবার (৩০ মে) শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ভোর ৬টায় দলের নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন।  সকাল সাড়ে ১০টায় দলের মহাসচিবের নেতৃত্বে বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সকল পর্যায়ের  নেতাকর্মীরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের মাজারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও মাজার জিয়ারত করবেন এবং  জিয়ারত শেষে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে দোয়া মাহফিলে শরিক হবেন। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের প্রতি থানায় দুঃস্থদের মাঝে কাপড়, চাল-ডালসহ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে।  

সারা দেশে কর্মসূচি

বিএনপির উদ্যোগে সারা দেশে জেলা ও মহানগরীসহ সকল ইউনিট এবং উক্ত ইউনিট সমূহের অধীনস্থ সকল ইউনিট কার্যালয়ে ৩০ মে ভোর ৬টায় দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং নিজ নিজ এলাকার সুবিধা অনুযায়ী আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও দুঃস্থদের মাঝে কাপড়, চাল-ডালসহ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হবে।