হাসিনা-টিউলিপকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

রাজধানীর পূর্বাচলে রাজউকের প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা এক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা এবং তার দুই মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ ১২ জনকে আগামী ১ জুলাই আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এ নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগসংক্রান্ত ছয় মামলায় শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট থানা থেকে পাঁচ মামলায় সব আসামির অবস্থান সম্পর্কে প্রতিবেদন না আসায় ওই পাঁচ মামলায় আগামী ১ জুলাই গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য আদালত নতুন তারিখ ধার্য করেন। এক মামলায় ১২ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করে বলা হয়েছে, তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আদালত তাদের হাজির হওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
অন্য যাদের হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা হলেন—রাজউকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার; সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব মো. অলিউল্লাহ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াসি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মিয়া, রাজউকের সদস্য মো. খুরশিদ আলম, তন্ময় দাস, মো. নাসির উদ্দিন, সাবেক সদস্য মেজর (অব.) শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আদালতের প্রসিকিউশন কার্যালয় থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
ছয় মামলায় আরও যারা আসামি তারা হলেন—শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানা, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, রাজউকের সাবেক সদস্য মো. মাজহারুল ইসলাম, কবির আল আসাদ, সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, নায়েব আলী শরীফ, উপপরিচালক কামরুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম ও মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিবের একান্ত সহকারী শহীদুল্লাহ খন্দকার ও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
এসব মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গত ১৩ ও ১৫ এপ্রিল আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। নিজের ও স্বজনদের নামে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করা হয়। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুদক এই মামলাগুলো করে।
মামলার প্রতিটিতে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। অন্যান্য মামলায় বিভিন্নজনকে আসামি করা হয়। তবে রাজউক এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা শেখ হাসিনার সঙ্গে ছয় মামলার আসামি।
এর আগে গত ২৫ মার্চ দুদক ছয় মামলায় হাসিনা, জয়, রেহানা, টিউলিপ, রাদওয়ান, আজমিনাসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে ছয় মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, শেখ হাসিনা রাজউক কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে নিজের জন্য, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সাজীব ওয়াজেদ জয়, কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ রেহানার ছেলেমেয়েদের জন্য তথ্য গোপন করে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন।