ইবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা বিভাগের সংবাদ সম্মেলন

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক অবস্থান, কার্যক্রম, গঠনতন্ত্র ও কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসির ক্যাফেটেরিয়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক এসএম সুইট এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়া জেলা শাখার আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান, সদস্য সচিব মুস্তাফিজুর রহমান, যশোর জেলার আহ্বায়ক রাশেদ খান, মাগুড়া জেলার আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সেলিম হোসেন, নড়াইল জেলার আহ্বায়ক আব্দুর রহমান মেহেদিসহ খুলনা বিভাগের সব জেলা পর্যায়ের ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন হিসাবে অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করছি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কোন একটি রাজনৈতিক দলে জড়িয়ে এই শহীদী ব্যানারকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করবে না, সেই দল বিএনপি হোক, জামায়াত হোক, এনসিপি হোক কিংবা অন্য যেকোনো রাজনৈতিক শক্তি হোক। তবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রাম এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমরা সকলের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, ছাত্রসমাজের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে যুক্তি, মানবিকতা ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়া। বর্তমান সময়ে অনেকেই আমাদের ব্যানারকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে চাইছে, যা আমরা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণমানুষের পক্ষে, নিপীড়িতদের কণ্ঠস্বর ও মুক্তবুদ্ধির প্রকাশ। ভবিষ্যতেও আমরা দলীয় প্রলোভন বা চাপে মাথা নত করবো না। আমাদের আন্দোলন থাকবে সম্পূর্ণ ছাত্রস্বার্থ ও ন্যায়ের পক্ষে, দলীয় লেজুড়বৃত্তির বাইরে। যারা আমাদের কর্মকাণ্ডে দলীয় রঙ দিতে চায়, আমরা তাদেরও আহ্বান জানাই, ছাত্রদের আন্দোলনকে কলুষিত করবেন না।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনি ব্যবস্থায় রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিদের প্রভাব কোনভাবেই প্রত্যাশিত নয়। আরো লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, উক্ত নির্বাচনে যে সকল নেতৃবৃন্দ গণঅভ্যুত্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন অর্থাৎ জেলা আহ্বায়ক কমিটি থেকে প্রার্থীতার সুযোগ রাখলেও ভোটাধিকার ব্যবস্থার কোন সুযোগ রাখেননি। এরই প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দরা তিন দফা দাবি জানান, দাবিগুলো হলো-
১. নির্বাচন কমিশন নতুন করে গঠন করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচন কমিশন হতে পারবে না।
২. জেলার নেতৃবৃন্দকে প্রার্থীতার পাশাপাশি ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে।
৩. কেন্দ্রীয় যে সকল সমন্বয়ক কোন রাজনৈতিক দলে নেই তাদেরকে প্রার্থীতা ও ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে।
এসব দাবি না মানা হলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ।