সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় সাঁতরে নদী পার হচ্ছে ৮ গ্রামের মানুষ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নে বারোমাসিয়া (বাণিদাহ) নদীর ওপর একমাত্র বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই পাড়ের অন্তত আট গ্রামের মানুষ। প্রায় এক মাস ধরে কেউ হাঁটুপানি, কেউ বা এক বুক পানি মাড়িয়ে, আবার কেউ সাঁতরে নদী পার হচ্ছেন। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু, নারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার নবিউলের ঘাট বা আমিন মেম্বারের ঘাট নামক স্থানে ২২০ ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোর দক্ষিণ পাশের প্রায় ৫০-৬০ ফুট অংশ ভেঙে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন জীবন ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন হাজারো মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, স্বাধীনতার পর থেকেই বারোমাসিয়া নদী পার হতে হতো ছোট নৌকায়। পরবর্তীতে নদী সংকুচিত হয়ে পড়ায় স্থানীয় উদ্যোগে প্রায় এক দশক আগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। বর্ষাকালে নদীতে পানির চাপ বেড়ে গেলে সাঁকোর নিচে জমে থাকা কচুরিপানার চাপে মাসখানেক আগে সাঁকোটি ভেঙে পড়ে।
ভুক্তভোগী কিশামত শিমুলবাড়ীর আহের আলী ও ঝাঁউকুটি এলাকার নুর ইসলাম বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে সাঁকো ভেঙে পড়ে আছে, কেউ খোঁজ নেয়নি। বাইসাইকেল কাঁধে নিয়ে নদী পার হতে হয়। যেন দেখার কেউ নেই!’
কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আমিনুল হক জানান, গ্রামবাসীর সহযোগিতায় বাঁশ সংগ্রহ শুরু হয়েছে। তবে নদীতে পানির পরিমাণ বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। তিনি দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাছেন আলী বলেন, ‘সবার যৌথ উদ্যোগে হলেও ভেঙে যাওয়া সাঁকোটির দ্রুত পুনর্নির্মাণ জরুরি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। পাশাপাশি স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।’
ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজউদ্দৌলার বলেন, ‘খুব শিগগিরই সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এরপর বরাদ্দ এলে সেখানে বাঁশের সাঁকোটি পুনর্নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, ভাঙা সাঁকোটিই কিশামত শিমুলবাড়ী, চরগোরকমণ্ডল, ঝাঁউকুটি, পশ্চিম ফুলমতি, নাওডাঙ্গা, হকবাজার, চরখারুয়া ও খারুয়া- এই ৮ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা ছিল। এখন এটি না থাকায় স্কুলগামী শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে।