উজানের ঢল নামছে, চোখ রাঙাচ্ছে তিস্তা

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে তিস্তা অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আজ সোমবার (২১ জুলাই) সকাল ৬টায় তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি যে গতিতে বেড়ে চলেছে, তাতে যেকোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
এ অবস্থায় তিস্তা অববাহিকায় দেখা দিয়েছে বন্যার শঙ্কা, আর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী শতাধিক চরের মানুষের মধ্যে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে।
পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইতোমধ্যে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তা ব্যারাজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বলেন, রবিবার ভোর থেকে পানি বাড়তে শুরু করেছে। সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, সে জন্য ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, সোমবার সকালে পানি আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটারে। যা বিপদসীমার মাত্র ৭ সেন্টিমিটার নিচে। বিপদসীমা অতিক্রম করলে নীলফামারীসহ ভাটির অঞ্চল—রংপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে বন্যা দেখা দিতে পারে।
তাছাড়া, উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় পানি যেকোনো সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি অনেক বেড়েছে। অনেক চরের ফসল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে।
তিস্তা অববাহিকার বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমরা নদী পাড়ের মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকি। বন্যা, খরা, নদীভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করেই আমাদের জীবন চলে। ভারতের উজানে যে গেটটা আছে, তার নাম গজলডোবা। এটা পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। খরার সময় গেট বন্ধ রাখে, আর বর্ষায় থেমে থেমে পানি ছেড়ে আমাদের ভাসিয়ে দেয়।
তিনি জানান, বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের ছেড়ে দেওয়া পানিতে।
তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি বাড়ছে ঠিকই, তবে এখনও বিপদসীমার নিচে আছে। আমরা সতর্ক রয়েছি এবং চরের মানুষকেও সতর্ক থাকতে বলেছি।