৭১ শতাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় : ডা. তাহের
‘দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়’ দাবি করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ‘অধিকাংশ জনগণের মতামত মেনে নেওয়ার নামই ডেমোক্রেসি।’
বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ শাখার যৌথ আয়োজনে ‘জুলাই ঘোষণা ও জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং সেই আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডা. তাহের।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন চায়, সিলেকশন নয় এবং সেটি মেনেও নেবে না। সরকার যে নির্বাচন রোডম্যাপ দিয়েছে, তা একমাত্র একটি দল স্বাগত জানিয়েছে। দেশের গণতন্ত্রকামী অন্যান্য রাজনৈতিক দল এই রোডম্যাপকে স্বাগত জানাতে পারেনি। কারণ, নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, সব গণহত্যার বিচার এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি।’

জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও দেশের জনগণ একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখেনি। জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর জাতি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে, যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে। এজন্য দরকার রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার এবং অতীতের গণহত্যার বিচার।’
ডা. তাহের অবিলম্বে জনগণের দাবি মেনে জুলাই ঘোষণাপত্রের আইনি ভিত্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। সমাবেশ যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম।

নূরুল ইসলাম বুলবুল তার বক্তব্যে সমাবেশের কারণে নগরবাসীর সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এই কষ্ট জাতির আগামীর ভাগ্য নির্ধারণের সংগ্রামের অংশ।’
নূরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, ‘সরকার যেন কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের আনুগত্য না করে, বরং গণভোটের মাধ্যমে জুলাই ঘোষণার আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি কোনো দলের একক দাবি নয়, বরং জনগণের ন্যায্য অধিকার। পিআর পদ্ধতিতেই প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার ও সংসদ গঠিত হয়।’ পিআরসহ সাত দফা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেনসহ অন্যান্যরা। এ ছাড়া সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ শেষে বিজয়নগর থেকে শুরু হওয়া বিশাল বিক্ষোভ মিছিল কাকরাইল নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।