গণতন্ত্রের প্রশ্নে খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব তুলনাহীন : মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, গণতন্ত্রের প্রশ্নের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব এবং নেতাকর্মীদের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও স্নেহ তা তুলনাহীন।
আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মির্জা আব্বাস।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘কারাগারে বেগম খালেদা জিয়াকে চরম নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের যেই কক্ষে রাখা হয়েছে, সেই কক্ষে ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করত, পোকামাকড় দৌড়াদৌড়ি করত। কয়েকজন ডেপুটি জেলার, জেলার অন্যায়ভাবে তাকে ছাদের ওপরে একটি কক্ষে রেখেছিল।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে আমি এই অনুষ্ঠান থেকে বেগম খালেদা জিয়ার জেলজীবনে তার ওপরে যে অত্যাচার হয়েছে, যে নির্যাতন হয়েছে, কারা কারা এর সঙ্গে দায়ী তাদের সবার একটা বিচার হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি এবং এর বিচার হওয়া উচিত।’
বিএনপির দুর্দিনে দলের নেতৃত্ব দিয়ে খালেদা জিয়া যে ভূমিকা রেখেছেন তা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা যারা কয়েকজন তার সঙ্গে কাজ করেছি তারা দেখেছি, নানা চাপের মধ্যে দেশনেত্রীকে আমরা দেখেছি দৃঢ় মনোবল। গণতন্ত্রের প্রশ্নে তার আপসহীন নেতৃত্ব এবং নেতাকর্মীদের প্রতি তার যে ভালোবাসা ও স্নেহ, তা তুলনাহীন।’
২০০৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান বেগম খালেদা জিয়া। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করলেও বারবার পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন তৎকালীন শেখ হাসিনার সরকার নাকচ করে দেয়। দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়লে ছয় মাসের জন্য সাজা স্থগিত করে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বেগম খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয় সরকার। এ সময় গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় বন্দি রাখা হয় বেগম খালেদা জিয়াকে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে খালেদা জিয়া চতুর্থ। বাবা এস্কান্দর মজুমদার, মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। পৈত্রিক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী হলেও তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দিনাজপুরে বাবার কর্মস্থলে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর রাজনীতির অঙ্গনে পা রাখেন খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন তিনি। তিন দফা বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন খালেদা জিয়া।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপি এই মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এই মিলাদ অনুষ্ঠানের পাশাপাশি রাজধানীতে বিভিন্ন মসজিদে ও এতিমখানা-মাদ্রাসায় বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্মদিন উপলক্ষে এই মিলাদ ও দোয়া, মাহফিল হচ্ছে।
ঢাকা ছাড়াও সারা দেশে মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও দলের চেয়ারপারসনের আরোগ্য কামনায় এই মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভীর সঞ্চালনায় নয়াপল্টনের মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানও বক্তব্য দেন। এই মিলাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নিরব, আসাদুল করীম শাহিন, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহানরগর দক্ষিন বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়নসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।