টানা বৃষ্টির প্রভাবে ঝিনাইদহে বেড়েছে শাকসবজির দাম

প্রবল বৃষ্টিপাতে ঝিনাইদহে শাকসবজির উৎপাদন কমে গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে অনেক ক্ষেতের সবজি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে বেড়েছে শাকসবজির দাম। যদিও গত সপ্তাহ থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমেছে, তবে নতুন করে চারা রোপণ ও ফসল উৎপাদন সময়সাপেক্ষ। ফলে আগামী কয়েক সপ্তাহ বাজারে তরিতরকারির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাকসবজির দাম চড়া অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে জেলার ৬ উপজেলার শহরতলীর বাজারগুলোতে দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে বিভিন্ন সবজির দাম গড়ে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।
জেলা শহরের নতুন হাটখোলা বাজার, আরাপপুর কাঁচাবাজার, ওয়াপদা গেট বাজার, ডাকবাংলা বাজার, নগরবাথান বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাব সবচেয়ে বেশি। এসব বাজারে খুচরা পর্যায়ে আলু প্রতিকেজি ২৫-৩০ টাকা, পুঁইশাক প্রতি আঁটি ৩৫-৪০ টাকা, পটল ৫৫-৬০ টাকা, বেগুন ৮০-৯০ টাকা, আমড়া ৩০-৩৫ টাকা, করলা ৭৫-৮০ টাকা, ওঁল ৭৫-৮০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা থাকলেও চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে মরিচের দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়েছে। একইভাবে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা, শুকনা মরিচ ৪০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা এবং শিম ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকারি বাজারে সবজির দাম খুচরার তুলনায় গড়ে ৫ থেকে ৭ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের সবজি চাষি আনিসুর রহমান জানান, জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত টানা ১৫ দিনের মতো বৃষ্টি হয়েছে। ফলে অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে জমি প্রস্তুত ও ফসল ফলাতে সময় লাগবে।
শৈলকূপার মদনডাঙা গ্রামের কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে সবজির দাম বাড়ছে। তবে যেসব কৃষকের ক্ষেত টিকে আছে, তারা ভালো দাম পাচ্ছেন।
সদর উপজেলার নগরবাথান বাজারের ব্যবসায়ী সবুজ হোসেন বলেন, পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে। এ কারণে দাম বেড়েছে। সাধারণত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে সবজির দাম কিছুটা বাড়ে।
ঝিনাইদহ কাঁচাবাজার আড়তদার সমিতির উজ্জ্বল মিয়া বলেন, সবজির দাম ওঠানামা করে। গত সপ্তাহে দাম নাগালের মধ্যে ছিল। কিন্তু এ সপ্তাহে বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় আগামী কয়েক সপ্তাহ দাম বাড়তি থাকতে পারে।