ব্লগার অভিজিৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ফারাবী জামিনে মুক্ত

ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শফিউর রহমান ফারাবী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকাল সোয়া ১০টার দিকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন ফারাবী জামিনে মুক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জামিনের কাগজ বৃহস্পতিবার কারাগারে এসে পৌছালে তা যাচাই-বাছাই করে তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের বিচারপতি বেঞ্চ শফিউর রহমান ফারাবীর জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান। মামলার চার আসামির স্বীকারোক্তি শফিউরের বিরুদ্ধে নেই, কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী তার নাম উল্লেখ করেননি এবং নিজে কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। এছাড়া, দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে থাকার বিষয়টি বিবেচনা করা হয় গত ৩১ জুলাই ফারাবির জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এরপর চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের জামিন স্থগিতের আবেদনের শুনানি শেষে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। ফলে হাইকোর্টের আগের জামিন আদেশ বহাল থাকে।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
এই মামলায় ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় দেন। রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং এক আসামিকে (শফিউর রহমান ফারাবী) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই হাইকোর্টে আপিল করেন ফারাবী।