কোটালীপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনায় ভাইদের হাতে ভাই খুন

বসত বাড়ির ছাদের পানি পড়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে ভাইয়ের লাঠির আঘাতে আপন ভাই নিহত হয়েছে। গতকাল রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার উনশিয়া গ্রামের ঘোষ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উনশিয়া গ্রামের মৃত সুধীর ঘোষের ছেলে ব্যবসায়ী আনন্দ ঘোষের (৪৫) সাথে বাড়ির ছাদের পানি পড়া নিয়ে তার আপন ভাই গৌরাঙ্গ ঘোষ (৫২), কালা ঘোষ (৫০) ও যুগল ঘোষ (৩০) পূর্ব থেকে বিরোধ করে আসছিল। ঘঠনার দিনে বৃষ্টি হওয়ায় আনন্দ ঘোষের সাথে আপর তিন ভাইয়ের কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভাই গৌরাঙ্গ ঘোষ, কালা ঘোষ, যুগল ঘোষ ভাতিজা নয়ন ঘোষ ও সৌরভ ঘোষ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আনন্দ ঘোষকে আহত করে।
পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী আনন্দ ঘোষকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আনন্দ ঘোষের স্ত্রী মিতা ঘোষ বলেন, দিনে বৃষ্টি হয়েছে। ছাদ থেকে এই পানি পড়ায় রাতে আমার দেবর ও ভাসুররা বাড়িতে এসে আমার স্বামীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।
আনন্দ ঘোষের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে অথৈ ঘোষ বলেন, আমার বাবা আমাকে নার্স বানাতে চেয়েছিল। আমারও নার্স হওয়ার স্বপ্ন ছিল।আমার সেই স্বপ্ন এখন আর পূরণ হবে না। আমার কাকা ও কাকাতো ভাইরা মিলে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমি আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
প্রতিবেশী বাচ্চু হাওলাদার বলেন, এই ছাদের পানি পড়া নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সালিশকারিদের কোন সিদ্ধান্তই এরা মানে না। শেষ পর্যন্ত সামান্য ছাদের পানি পড়া নিয়ে ভাই, ভাতিজাদের হাতে আনন্দকে জীবন দিতে হলো।
এ বিষয়ে জানতে ঘোষ বাড়িতে গিয়ে অভিযুক্ত গৌরাঙ্গ, কালা বা যুগল ঘোষ কাউকেই পাওয়া যায়নি।
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত আনন্দ ঘোষের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।