‘আনলক বিগ চেঞ্জ’ সম্মাননা পেলেন ড. ইউনূস

শিক্ষা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পথপ্রদর্শক ভূমিকা এবং মানবকল্যাণে আজীবন প্রতিশ্রুতির স্বীকৃতিস্বরূপ ‘আনলক বিগ চেঞ্জ’ সম্মাননা পেয়েছেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের একটি হোটেলে শিশুদের বৈশ্বিক দাতব্য সংস্থা ‘দেয়ারওয়ার্ল্ড’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জাতিসংঘের বৈশ্বিক শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ দূত ও যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এবং দেয়ারওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যান সারা ব্রাউন যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ইউনূসের পাশাপাশি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডিকেও এই সম্মাননা দেওয়া হয়। তবে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য ড. ইউনূসের কাজই উপস্থিত অতিথিদের মাঝে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেন।
পুরস্কার প্রদানকালে গর্ডন ব্রাউন অধ্যাপক ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি তাকে বৈশ্বিক পথপ্রদর্শক হিসেবে অভিহিত করেন, যার কাজ লাখ লাখ মানুষকে ক্ষমতায়িত করেছে। গর্ডন বলেন, গত ৫০ বছরে বেসরকারি খাতে এমন কোনো প্রকল্প নেই যা মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে এর চেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে।
পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মতোই ঋণ পাওয়া একটি মৌলিক মানবাধিকার। যদি আপনি আর্থিক ব্যবস্থার দরজা খুলে দেন, তবে আর কেউ গরিব থাকবে না। আমি ক্ষুদ্রঋণ প্যাকেজে শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলাম। আমরা নারীদের সহায়তা করেছি যাতে তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারে।
আর্থিক ক্ষমতায়ন ও শিক্ষার মধ্যে গভীর সম্পর্ক তুলে ধরে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীরা তাদের পরিবারকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে এবং সন্তানদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে পেরেছেন। শিক্ষার প্রথাগত মডেলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ছোটবেলা থেকেই সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তা তৈরি করার জন্য মানসিকতার পরিবর্তনের আহ্বান জানান তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শিশু হিসেবেই আপনার শেখা উচিত কীভাবে একজন উদ্যোক্তা হতে হয়।
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে এমনভাবে ব্যবসা শেখানো উচিত যেন তা জনকল্যাণের একটি শক্তি হয়ে ওঠে। মানুষের সব সমস্যার সমাধান ব্যবসায়িক উপায়ে করা সম্ভব।