বিশেষ ব্যবস্থায় ফেরানো হচ্ছে সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকদের

অষ্টম শ্রেণির এক মারমা ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে ‘জুম্ম ছাত্র জনতার’ ব্যানারে ডাকা সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলছে। আজ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধে পুরো জেলার সড়ক যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
অবরোধের শুরু থেকেই জেলা সদর চেঙ্গী ব্রিজ, চেঙ্গী স্কোয়ার, মহাজন পাড়াসহ জেলার আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে গাছ কেটে গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন অবরোধকারীরা। এতে ঢাকা ও অন্যান্য স্থান থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়িগামী নৈশ কোচগুলো পথে আটকে পড়ে। অন্যদিকে খাগড়াছড়ি থেকেও কোনো দূরপাল্লার বা অভ্যন্তরীণ রুটের যানবাহন ছেড়ে যায়নি। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের কয়েকটি স্থানে পুলিশি ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
গত মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় মারমা স্কুল ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে মামলা হয় এবং সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করে ৬ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এই ধর্ষণের ঘটনা ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে পরের দিন বুধবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করে ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’। বৃহস্পতিবার আধাবেলা সড়ক অবরোধ পালনের পর শুক্রবারের মহাসমাবেশ থেকে আজ ফের সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বিক্ষোভকারীরা।
‘জুম্ম ছাত্র জনতার’ এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুবফোরাম।
অবরোধের কারণে সাজেকে যাওয়া পর্যটকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পর্যটকদের অভিযোগ, ভোগান্তির কারণে থাকা, খাওয়া ও নিরাপত্তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। অনেকেই নিরাপদ গমন ও ভ্রমণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাঘাইহাট জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ভোগান্তি এড়াতে সাজেকে আটকা পড়া পর্যটকদের বিশেষ ব্যবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
সাজেকের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, পর্যটক ভোগান্তির এই খবর পাহাড়ের সম্ভাবনাময়ী পর্যটন খাতকে পিছিয়ে দেবে। এতে পাহাড়ি ও বাঙালি অনেক ব্যবসায়ী বিপাকে পড়বেন এবং অর্থনৈতিক লোকসানের পাশাপাশি কর্মসংস্থান কমবে বলে উদ্যোক্তারা আশঙ্কা করছেন।
স্থানীয়দের দাবি, পাহাড়ে নিপীড়ন বন্ধে সকলের সহমত থাকলেও, অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে পর্যটন খাতকে অবরোধ ও সহিংসতার আওতামুক্ত রাখা উচিত।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলেও তা সরিয়ে দিতে কাজ চলছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।