নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠায় বাধা দানকারীরা গণতন্ত্রের শত্রু : দুদু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বাংলাদেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার পথে যারা বাধা দেবে, তারাই দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় শত্রু।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের উদ্যোগে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশে আজ রোববার (৫ অক্টোবর) এ কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশ তখনই বিপন্ন হবে, যখন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিকভাবে জনগণ সম্পৃক্ত একটি সরকার অনুপস্থিত থাকবে। মানুষের মধ্য দিয়ে যে সরকার আসবে, সেই সরকারের দায়িত্ববোধ আর অনির্বাচিত অথবা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ববোধ এক হয় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে এমন একটি সরকার ছিল, যারা টানা ১৫ বছর ধরে তথাকথিত নির্বাচনের নামে প্রহসনের মধ্য দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় ছিল। সেই সরকারই দেশের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক শক্তি। শেখ হাসিনা তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে জাতির ও বিশ্ববাসীর কাছে গণদুশমন ও গণবিরোধী শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এত বড় ফ্যাসিবাদী, গণহত্যাকারী ও লুটপাটকারী শাসন আর কখনো দেখা যায়নি।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বর্তমানে শেখ হাসিনা পলাতক অবস্থায় আছেন। তিনি এমন একটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, যে দেশ বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে এবং সীমান্ত সিল করে রেখেছে। ফলে বাংলাদেশের জনগণ পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে পারছে না। যে দেশটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে শত্রুভাবাপন্ন দেশ হিসেবে দেখেছে, সেই ভারতের কোলে আশ্রয় নিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ মতো এত বড় নির্মম ও নির্দয় চিহ্নিত গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। বন্ধুত্বের মুখোশে তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব যদি রক্ষা করতে হয়, তাহলে এই গণহত্যাকারী লুটেরা ও তাদের বন্ধুদেরকে আমাদের রুখতে হবে।
বিএনপিনেতা শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে আর আমরা যদি সজাগ না থাকি, তাহলে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, বাংলাদেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার পথে যারা বাধা দেবে, তারাই দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সবচেয়ে বড় শত্রু।
বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের ভোটের মাধ্যমে এমন একটি সরকার আসবে, যা হবে জনগণের হৃদয়ের সরকার। কিন্তু বিভিন্ন টালবাহানা, ষড়যন্ত্র বা মতলবি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যদি সেই নির্বাচিত সরকারকে ঠেকানোর চেষ্টা করা হয়, তবে তা দেশের স্বার্থ ও গণতন্ত্রের পরিপন্থি হবে, এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশ থাকলে আমরা সবাই থাকব। বাংলাদেশ থাকলে একদিন সব সমস্যার সমাধান হবে। বাংলাদেশ থাকলে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকবে, থাকবে স্বাধীনতার জন্য রক্ত দেওয়া লাখো মানুষের স্মৃতি।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এই বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হলে, দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে আমাদের পরীক্ষিত নেতৃত্ব বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে হবে। তারা গত ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই নেতৃত্বের প্রতি আমাদের সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে রক্ষা করি, দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করি ও পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি।
‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপত্বিতে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়ছার লিংকন, চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দীন কবির ও জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনসহ অন্যান্যরা।