শেয়ারবাজার থেকে ৪০৯ কোটি টাকা সংগ্রহের অনুমতি পেল একমি

শেয়ারবাজার থেকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পাঁচ কোটি শেয়ার ছেড়ে ৪০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা পুঁজি সংগ্রহের অনুমোদন পেয়েছে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড।
গতকাল মঙ্গলবার শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৫৬৭তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমিশনের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় কোম্পানিটির পাঁচ কোটি শেয়ারের মধ্যে ৫০ শতাংশ বা আড়াই কোটি যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর জন্য ও ১০ শতাংশ বা ৫০ লাখ শেয়ার মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য সংরক্ষিত। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের দাম (কাট-অব মূল্যে) ৮৫ টাকা ২০ পয়সা (৭৫ টাকা ২০ পয়সা প্রিমিয়ামসহ) নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ বা দুই কোটি শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারী, ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী ও অনাবাসী বাংলাদেশিদের (এনআরবি) জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ার কাট অব মূল্যের হ্রাসকৃত মূল্যে ৭৭ টাকায় বিক্রির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর একমি ল্যাবরেটরিজের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের জন্য ৭১ টাকা নির্দেশক মূল্য অনুমোদন করে বিএসইসি। এর পর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে বুক বিল্ডিংয়ের জন্য নির্ধারিত যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে আইপিওর পুরোনো বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে (কাট-অব-প্রাইস) নির্ধারিত হয়েছে ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। পুরোনো নিয়ম অনুযায়ী সব ধরনের বিনিয়োগকারীর এ দরেই শেয়ার কেনার কথা। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে তাঁদের জন্য নির্ধারিত ৪০ শতাংশ শেয়ারের দর নির্ধারণ করা হয় বুক বিল্ডিংয়ের সংশোধিত পদ্ধতির আলোকে। ১৭ ফেব্রুয়ারি এ সিদ্ধান্ত দেয় বিএসইসি।
কোম্পানিটির খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, শেয়ারবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থ তিনটি নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও আইপিওর খরচ খাতে ব্যয় করা হবে।
কোম্পানিটির আইপিওর ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। আর রেজিস্টার টু দ্য ইস্যু হিসেবে থাকবে প্রাইম ফিন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে চার টাকা সাত পয়সা। ২০১৫ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়া হিসাব বছরে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে পাঁচ টাকা ৭০ পয়সা ও শেয়ারপ্রতি প্রকৃত সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭০ টাকা ৩৭ পয়সা।
একমি ল্যাবরেটরিজ ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ প্রতিষ্ঠান ফার্মাসিউটিক্যাল, হারবাল, আয়ুর্বেদিক, ভেটেরিনারিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির পাঁচ শতাধিক ওষুধ উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক মান নিয়ণন্ত্রণ সংস্থার (আইএসও) সনদ পায়। এর পণ্য অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রির পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্য আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও রপ্তানি হচ্ছে।