ইইউ নিয়ে যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্তে ডিসিসিআই উদ্বিগ্ন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/06/25/photo-1466871368.jpg)
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের সদস্যপদ প্রত্যাহারের ব্যাপারে গণরায়ের সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
আজ শনিবার ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ব্রিটেনবাসীর এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ধারায়ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ব্রিটেনবাসীর এ রায় এরই মধ্যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। যেটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পাশাপাশি ইউরোপের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের চলমান অগ্রগতির ধারাকে ব্যাহত করতে পারে। যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বে নতুন একটি ভূ-রাজনৈতিক ধারার পাশাপাশি একটি ভূ-অর্থনৈতিক ধারা সৃষ্টি করতে পারে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির বৃহৎ বাজারের একটি হলো ইউরোপ। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক বিনিয়োগকারী দেশ। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়। যেখানে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অপ্রচলিত পণ্যও যুক্তরাজ্যে রপ্তানি হয়ে থাকে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এটি বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধার আওতায় পণ্য রপ্তানি এবং বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহের ধারাকে প্রভাবিত করবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও যুক্তরাজ্য কর্তৃক বাংলাদেশে পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করে সংগঠনটি।
ঢাকা চেম্বারের মতে, এর ফলে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা ও বৈশ্বিক মুদ্রাবাজার ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রবণতা ও মন্দা অবস্থার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য মুদ্রার সঙ্গে পাউন্ডের বিনিময় হার কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। যদিও এরই মধ্যে ডলারের বিপরীতে পাউন্ড ১০ শতাংশ ও ইউরোর বিপরীতে ৩ শতাংশ কমেছে। যার ধারা বাংলাদেশকে প্রভাবিত করার সম্ভাবনাকে আরো ঘনীভূত করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে পাউন্ড স্টারলিং ও ইউরোর অবমূল্যায়ন বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে মন্দার প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ৫৫ শতাংশ ইইউভুক্ত দেশগুলোতে ও ১২ শতাংশ যুক্তরাজ্যে গিয়ে থাকে। ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের এ অবমূল্যায়ন রেমিটেন্স এবং বৈদেশিক বিনিয়োগেও মন্দাবস্থা তৈরি করতে পারে।
ইইউ জোট থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তাতেও বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ডিসিসিআই।
বিষয়টি নিয়ে এর সম্ভাব্য প্রভাব নির্ধারণ করে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কূটনৈতিক দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বা মধ্যস্থতার উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। ব্রিটেনের ইইউ ত্যাগ-পরবর্তী আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী সংগঠন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, গবেষক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছে।