সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ২৩ শতাংশ

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২২ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান কর্মকর্তা এএফএম শাহীনুল ইসলাম।
আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকে জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সভায় এএফএম শাহীনুল ইসলাম বলেন, বিএফআইইউ কাজের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিবছর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরের প্রতিবেদনে বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি একাধিক বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন এবং জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়কালে বিএফআইইউর গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলো হতে বিএফআইইউতে দাখিলকৃত বিভিন্ন রিপোর্টের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলো বিএফআইইউতে ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন/কার্যক্রম প্রতিবেদন দাখিল করেছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২২ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। এটি মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাসগুলোর কর্মকর্তাদের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিএফআইইউর সক্রিয় ভূমিকা ও কর্মতৎপরতার প্রতিফলন। গত বছরের তুলনায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ হতে নগদ লেনদেন বিবরণীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
শাহীনুল ইসলাম বলেন, বিএফআইইউ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থায় প্রেরণ করে। এছাড়া বিএফআইইউ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার সাথে এক হাজার ২২০টি তথ্য বিনিময় করেছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি।
বিএফআইইউ প্রধান কর্মকর্তা আরও বলেন, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে বিএফআইইউ তদন্তকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য অংশীজনদের সাথে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। অগ্রাধিকার বিবেচনায় বিএফআইইউ কর্তৃক সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক এর এসটিএআর, ইউএসডিওজে, আইএসিসিসি, আইসিএআরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা হতে অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে পরামর্শ, কারিগরি সহায়তা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি আইনি সংস্থা নিয়োগের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
তবে, বিদেশ হতে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার একটি অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তারপরও আশা করা যায়, বিএফআইইউর বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বিদেশ হতে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে।
এএফএম শাহীনুল ইসলাম বলেন, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ কার্যক্রম জোরদারকরণের ফলে এএমএল ইনডেক্স ২০২৪ এ বাংলাদেশ এর র্যাংকিং বিগত বছরের তুলনায় ১৩ ধাপ এগিয়ে ৪৬ নম্বর হতে ৫৯ নম্বরে উন্নীত হয়েছে।
সভায় বিএফআইইউ পরিচালক মুহাম্মদ আনিছুর রহমান বার্ষিক প্রতিবেদনের বিষয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা প্রদান করেন। যেখানে বিগত অর্থবছরের বিভিন্ন কার্যক্রমের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।