চাকরি ছেড়ে রঙিন আম চাষে স্বপ্ন বুনছেন পলাশ

চাকরির নির্ধারিত সময় আর চার দেওয়ালের বন্ধন পেছনে ফেলে ভিন্ন কিছু করার সাহস দেখিয়েছেন পলাশ হোসেন নামের এক যুবক। এক সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত থাকলেও এখন তিনি পুরোদস্তর একজন কৃষক-তাও আবার ব্যতিক্রমী রঙিন আম চাষি।
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার ভাতসাইল গ্রামের এই যুবক বর্তমানে বিভিন্ন জাতের রঙিন আম চাষ করে এলাকায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। লাল, হলুদ ও বেগুনী রঙের আমও দেখা যায় তার বাগানে। বিশাল বড় বাগানে ছোট ছোট গাছে পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলে আছে এসব রঙিন আম। মূলত আমেরিকা, থাইল্যান্ড, জাপান ও চায়না জাতের তাইওয়ান রেড, আমেরিকার পালমার, চিআংমাই, কিংঅফচাকাপাত, মিয়াজাকি, ন্যামডকমাই, কিউজাই, ব্রুনাই কিং, আম্বিকাসহ মোট ১৭ জাতের রঙিন আম চাষ করেছেন তিনি।
পলাশ হোসেন বলেন, ‘চাকরি করার পাশাপাশি প্রথমে ইউটিউব দেখে আমের বিদেশী জাতের রঙিন চাষে আগ্রহ হয়। এরপর ছোট পরিসরে কয়েকটি বিদেশী জাতের চারা রোপণ করি। ফল যখন আসলো, এরপর প্রায় পাঁচ একর জমিতে দেশি ও বিদেশি ১৭ জাতের রঙিন আমের চারা রোপণ করি। পরে চাকরি ছেড়ে দেই। এ মৌসুমে দেশের বাহিরে আম আমদানি করার আশা আছে। তবে ৭-১০ লাখ টাকার আম বিক্রির আশা করছি। এ ছাড়াও বারো মাসি কাঁঠাল, কমলা, মাল্টার প্রজেক্ট রয়েছে এই বাগানে।’
বর্তমানে তার বাগানে রঙিন আম দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন লোকজন। আম থেকে প্রতি মৌসুমে কয়েক লাখ টাকার উপরে আয় করেন তিনি। আম বাগানকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকজন যুবকের। তাই আশেপাশের কয়েকজন বেকার যুবক তার দেখানো পথেই হাঁটছেন এখন।
স্থানীয় কৃষিবিভাগের কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলছে, ‘পলাশ হোসেন প্রতি বছর দেশি জাতের আমের পাশাপাশি সম্প্রতি বিদেশি জাতের আম উৎপাদন শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার আম বাগানে নতুন জাতের আম বাজারে আসতে শুরু হয়েছে। রঙিন আম দেখতে খুব ভালো লাগছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সর্বক্ষণিক তার পাশে আছে। যুবকরা এভাবে কৃষিতে এগিয়ে আসলে একদিকে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।’
চাকরি নয়, স্বপ্ন বেছে নিয়েছেন পলাশ। আর সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবতা। যা বদলে দিচ্ছে বদলগাছীর কৃষি-অর্থনীতি ও যুবকদের ভবিষ্যৎ।