এনবিআরে ফের কলম বিরতির ডাক

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঢাকাস্থ সব দপ্তরে আগামী সোমবার (২৩ জুন) তিন ঘণ্টা কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওইদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কলম বিরতি চলবে। অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ নিজ দপ্তরে একই সময়ে এই কর্মসূচি পালন করবে।
আজ শনিবার (২১ জুন) আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার ও মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকা এ ঘোষণা দেন। তারা দুজনই রাজস্ব বোর্ডের অতিরিক্ত কমিশনার।
তারা বলেন, এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের অপসারণ ও সংস্থাটি বিভক্ত করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্ব নীতি নামে দুইটি স্বতন্ত্র বিভাগ তৈরিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিত্ব রাখার দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। কর্মসূচি পালন শেষে ওইদিনই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এদিক গত ২৯ মে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে রাজস্ব ভবনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
ঐক্য পরিষদের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ ২১ জুন বিকেল ৫টায় রাজস্ব ভবনের নিচ তলার মেঝেতে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সবস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভা হয়। সভায় এনবিআরের অতিরিক্ত কর কমিশনার হাসান মুহম্মদ তারেক রিকাবদারকে সভাপতি এবং অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকাকে মহাসচিব করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ৩০১ সদদ্যের একটি এডহক কমিটি গঠনের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
সেখানে বলা হয়, ঐক্য পরিষদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সামগ্রিক রাজস্ব সংস্কার ভাবনার অংশ হিসেবে কেমন এনবিআর চাই শীর্ষক সেমিনার আয়োজনে গত ১৯ জুন একটি প্রস্তুতিমূলক সভার জন্য কক্ষ বরাদ্দ চেয়ে লিখিত পত্র দিলেও কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়ায় সভায় নিন্দা জানানো হয়।
ঐক্য পরিষদ বলছে, কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়ায় ‘রাজস্ব ভবনের নিচ তলার মেঝেতে সভাটি করা হয়। এর আগে গত ২ জুন একইভাবে কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব ভবনের নিচ তলার মেঝেতে সভা করেছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবারের সভার জন্য ঐক্য পরিষদের তরফে লিখিতভাবে বোর্ড প্রশাসনের সদস্যের কাছে সম্মেলন কক্ষ বরাদ্দের অনুরোধ করে চিঠি দেওয়া হলও অনুমোদন মিলেনি। সেদিনই রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ-২০২৫ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়কর ও কাস্টমস বিভাগের ছয়জন কর্মকর্তার একটি কমিটি করে অফিস আদেশ জারি করেছে এনবিআর। এনবিআরের এ কমিটিতে যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের দাবি জানানো হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে অধ্যাদেশ জারির পর তা বাতিলের দাবিতে কলম বিরতিসহ নানা কর্মসূচিতে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মুখে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পরে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি বজায় রাখেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি স্বাভাবিক কাজে ফিরলেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পরিষদের ব্যানারে কোনো কর্মসূচি নেওয়া হলেও তাদেরকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের কর্মকর্তাদের।