সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে হবে : এনবিআর চেয়ারম্যান

টিআইএন থাকার পরও যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল (প্রায় ৭২ লাখ লোক) করছেন না, আবার রিটার্ন দাখিল করলেও যেসব করদাতা আয়কর (প্রায় ৩০ লাখ লোক) পরিশোধ করছেন না- এমন এক কোটি করদাতার কাছ থেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আয়কর আদায় করতে নির্দেশনা দিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। জরিপ এবং স্পট এসেসমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করে নতুন করদাতা খুঁজে বের করার জন্যও নির্দেশনা দেন তিনি।
আজ সোমবার (১৪ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আয়কর বিভাগের জুলাই মাসের রাজস্ব আহরণ পর্যালোচনা সভার সভাপতির বক্তব্যে এনবিআর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। আয়কর বিভাগের সদস্য, ঢাকাস্থ কমিশনার, মহাপরিচালক, সচিবরা (প্রথম-দ্বিতীয়) সভায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া ঢাকার বাইরের আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে যুক্ত হন।
বকেয়া কর আদায় বাড়াতে আয়কর কমিশনারদেরকে বিশেষ নির্দেশ দেন আবদুর রহমান খান। তিনি জোন ভিত্তিক আদায়ের অগ্রগতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কমিশনারের কাছ থেকে বক্তব্য শোনেন। পাশাপাশি বকেয়া আদায়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা তা জানতে চান এবং আদায় বাড়াতে করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান করদাতাদের হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিতে চলতি মাসের মধ্যেই সব নথি ট্রান্সফার সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। একইসঙ্গে যেকোনো মূল্যে অডিট সিলেকশনে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
আবদুর রহমান বলেন, অডিট সিলেকশন হতে হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে যেখানে মনুষ্য কোনো প্রভাব কাজ করবে না। অডিটের উদ্দেশ্য কর আদায় বাড়ানো নয় বরং করফাঁকি রোধ করে কর সংস্কৃতির উন্নয়নই মূল লক্ষ্য।
টিআইএন থাকা সত্ত্বেও যারা রিটার্ন দাখিল করেন নাই (ননফাইলার) তাদের রিটার্ন দাখিলে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যারা রিটার্ন দাখিল করেন না, তাদের নিয়ে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে জনবলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে রিটার্ন দাখিল নিশ্চিতের জন্য নির্দেশনা দেন তিনি।
আবদুর রহমান বলেন, আয় ও সম্পদ বৈষম্য কমিয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠন এবং রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে মোট রাজস্ব আদায়ে আয়করের হিস্যা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা বারবার ব্যর্থ হচ্ছি। বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআর কর্তৃক মোট রাজস্ব আদায়ের বিপরীতে আয়কর খাতের আদায়ের হার বৃদ্ধি না পেয়ে বরং কিছুটা কমেছে।
আয়কর আদায় বাড়াতে হলে টিআইএন থাকা স্বত্ত্বেও যারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না এমন ৭২ লাখ করদাতা এবং রিটার্ন দাখিল করলেও যেসব করদাতা আয়কর পরিশোধ করছেন না এমন ৩০ লাখ করদাতা এই এক কোটি করদাতার নিকট থেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আয়কর আদায় করতে হবে। ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের জন্য আয়কর কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার হোক এই এক কোটি করদাতা। এছাড়া জরিপ এবং স্পট এসেসমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করে নতুন করদাতা খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন এনবিআর চেয়ারম্যান।