রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকে পদোন্নতির পদ্ধতি পরিবর্তন

দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সরকারি ব্যাংকগুলোতে কর্মরতদের পদোন্নতিতে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এটি প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাঠামো।
অর্থ মন্ত্রণালয় গত সোমবার (৪ আগস্ট) এ সংক্রান্ত এক পরিপত্র জারি করেছে।
আর্থিক খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও সেবার মান উন্নয়নে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বিশেষায়িত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির জন্য এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিপত্র অনুযায়ী, যেসব মাপকাঠিতে পদোন্নতি দেওয়া হয় তাতে অসামঞ্জস্য এবং মূল্যায়ন পদ্ধতির অস্পষ্টতা দূর করার জন্যই এই নীতিমালা করা হয়েছে। ৯ম গ্রেড হতে ৩য় গ্রেড পর্যন্ত পদের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা প্রযোজ হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এই নীতিমালা প্রযোজ্য হলো সেগুলো হলো— সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পদোন্নতি প্রক্রিয়া শুরুর আগে প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে গ্রেডভিত্তিক জ্যেষ্ঠতা তালিকা করতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা, সন্তোষজনক চাকরির রেকর্ড, মেধা, কর্মদক্ষতা, প্রশিক্ষণ, সততা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি বিবেচনা করা হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে স্নাতক ডিগ্রির নিচে কোনো প্রার্থী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন না।
তবে ফিডার পদে থাকা অবস্থায় কোনো বছরের রেকর্ড সন্তোষজনক না হলে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হবে না।
এছাড়া কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভাগীয় বা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় অভিযুক্ত হলে, ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হলে বা গ্রেপ্তার হলে চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত উক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী পদোন্নতির বিবেচিত হবেন না।
কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী লঘুদণ্ডপ্রাপ্ত হলে দণ্ড ভোগের পর এক বছর পর্যন্ত তাদের পদোন্নতি বিবেচনা করা হবে না। গুরুদণ্ডের ক্ষেত্রে, দণ্ড ভোগের পর দুই বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন না।
পদোন্নতির জন্য নম্বর বিভাজনও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হতে হলে তাকে নির্ধারিত ন্যূনতম নম্বর পেতে হবে।

পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ লিখিত পরীক্ষা, ৩০ শতাংশ মৌখিক পরীক্ষা এবং বাকি ২০ শতাংশ চাকরির রেকর্ড ও প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও পরপর তিনবার পদোন্নতি পেতে ব্যর্থ হলে তা পর্যালোচনার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করা হবে।