পাঁচ ব্যাংক একীভূত হলে ক্ষুদ্র আমানতকারী টাকা পাবে আগে

একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্যে যাদের আমানত লাখ টাকা রয়েছে, তাঁরা সবার আগে টাকা ফেরত পাবেন। পরে বাকি গ্রাহকরা পর্যায়ক্রমে তাদের আমানত ফেরত পাবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, একীভূত হওয়ার পাঁচ ব্যাংক প্রশাসক নিয়োগের পর সরকারি তহবিল জোগান দেওয়া হলেই এসব গ্রাহকদের আমানত ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। যাদের দুই লাখ টাকা বা তার কম আমানত রয়েছে, তারা প্রথমে আমানত তোলার সুযোগ পাবে। পর্যায়ক্রমে বাকি গ্রাহকদের আমানত ফেরত পাবে।
আমানত ফেরত প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরী বলেন, সবার আগে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের দিকে নজর দিতে হবে। তাদের আতঙ্ক না কাটলে নতুন ব্যাংক করে সফল করা কঠিন হবে।
অনিয়ম, কুঋণসহ নানা ইস্যুতে পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করে একটি ব্যাংক গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে। চলতি মাসের মধ্যেই প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে এমনটি জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। চলতি মাসেই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নতুন এই ব্যাংক গঠনের বিষয়টি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে। যে পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, সেগুলো হলো- এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক। পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক নামে নতুন এক ব্যাংক।
জানা যায়, যেসব গ্রাহকদের আমানত দুই লাখ টাকার বেশি আছে, তাদের টাকা ফেরত পেতে অপেক্ষা করতে হবে। যেসব গ্রাহকদের আমানত বেশি, তাদের নতুন ব্যাংকের শেয়ার দেওয়ার প্রস্তাব করা হবে। ২০ শতাংশ আমানতকে শেয়ারে রূপান্তর করার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন ব্যাংকের মূলধন হচ্ছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ২০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ১৫ হাজার কোটি টাকা আসবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাঁদার টাকায় গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ব্যাংকের আমানত বিমা তহবিল ও প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকে শেয়ারে রূপান্তর করার মাধ্যমে। পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত আমানত গত মে মাসে এক লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকায় নেমেছে। মে মাসে এসব ব্যাংকের ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের ৭৭ শতাংশ।