ছাত্রলীগকর্মীদের বিচারের দাবিতে রাবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র সোহরাব হোসেনকে ছাত্রলীগকর্মীদের মারধরের প্রতিবাদে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইটের সামনে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এর আগে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।
কর্মসূচি থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো- ছাত্রলীগকর্মী নাহিদ ও আসিফসহ মারধরকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সোহরাব হোসেনের চিকিৎসাভার বহন করা।
অবরোধ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের মারমুখী আচরণ বেড়েই চলেছে। তুচ্ছ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের এর আগেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর করেছে। কিন্তু এসব ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। ছাত্রলীগও এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিচারের নামে বহিষ্কারের নাটক করে ছাত্রলীগ। কাউকে বহিষ্কার করলেও কিছুদিন পর আবার তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও নিশ্চুপ ভূমিকায়। তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও বরাবরের মতো ‘দেখছি দেখছি’ বলেই দায় এড়িয়েছে তারা।
হামলার শিকার সোহরাব হোসেন ফাইন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং শহীদ শামসুজ্জোহা হলে থাকেন। অপরদিকে মারধরকারীরা হলেন মো. আসিফ ও হুমায়ন কবীর নাহিদ। তাঁরা রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।
ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানায়, রাতে সোহরাব কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে হলে আসে। ওই সময় আসিফ ও নাহিদ কেন সোহরাব তাদের হলে নিয়ে এসেছে এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। পরে সোহরাব ও তাদের বন্ধুদের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান আসিফ ও নাহিদ। সেখানে অবরুদ্ধ করে সোহরাবকে মারধর করেন তারা। একপর্যায়ে ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ তুলে কাঠ দিয়ে সোহরাবের মাথায় আঘাত করলে তাঁর মাথা ফেটে যায়। মারধরে সোহরাবের বাঁ হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে যায়। খবর পেয়ে সহপাঠীরা তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, সোহরাবের মাথার তিন স্থানে ১৫টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। বাঁ হাতের দুই জায়গা ভেঙে গেছে।
মারধরের বিষয়ে ছাত্রলীগকর্মী আসিফ বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন থেকে সোহরাবের সঙ্গে আদিত্য ও সোহান নামের দুই বহিরাগত হলে আসা-যাওয়া করছিল। গতকাল রাতে তারা মাদক সেবনের জন্য হলের ছাদে ওঠে। গত ১৩ নভেম্বর রাতে আমার রুম থেকে ল্যাপটপ চুরি হয়। তাই সন্দেহ হওয়ায় আমি ও নাহিদসহ বেশ কয়েকজন তাদের ডেকে রুমে নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে আমাদের হাতাহাতি হয়। হাতাহাতির একপর্যায়ে সোহরাবের মাথা ফেটে যায়।’
এ বিষয়ে জানতে নাহিদকে ফোন করা হলে তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।