রাজশাহী পলিটেকনিকে মিলল টর্চার সেল, মুখ খুলল অনেকে

ছবি : এনটিভি
অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাট্টা হয়েছে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এত দিন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করে এলেও এখন সবাই মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
তাঁদের ভাষ্যমতে, কথায় কথায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের দলীয় টেন্টে সবার সামনে মারধর করতেন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আর যাদের আরো বেশি সাজা দিতে চাইত, তাদের ধরে নিয়ে যেত ইনস্টিটিউটের ১১১৯ নম্বর কক্ষে। কক্ষটি সবার কাছে ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে পরিচিত। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে টর্চার করার মতো আলামত সরিয়ে ফেলে ছাত্রলীগ। এরপরও আজ রোববার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, টেবিলের ওপরে রয়েছে কয়েকটি বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও পাইপ। দেয়ালে দেখা যায় রক্তের ছোপ।
অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ, জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি বন্ধের দাবিতে আজ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে দিনভর বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকালে ইনস্টিটিউটের প্রধান গেটসংলগ্ন মহাসড়কে মানববন্ধন করেছে তারা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার করতে হবে, তাদের স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে, কলেজে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্যাম্পাসে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় শনিবার রাতে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর শনিবার রাতভর অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে আটক করে পুলিশ। তাদেরকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখে এদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘটনার মূল হোতা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভ ও তাঁর অনুসারীদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে রোববার রাতে কামাল হোসেন সৌরভকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. গোলাম মোস্তফা জানান, ক্লাসে অনুপস্থিত ও মধ্যপর্ব পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও দুই ছাত্রকে ফাইনাল পরীক্ষার ফরম ফিলাপের দাবিতে শনিবার সকালে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভ ও তাঁর অনুসারীরা অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে। অধ্যক্ষ তাদের দাবি মেনে নেননি। এরপর দুপুরে ক্যাম্পাসের মসজিদ থেকে জোহরের নামাজ পড়ে বের হয়ে নিজ কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেন সৌরভ ও তাঁর সঙ্গীরা। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ বাদী হয়ে ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ৫০ জন অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এঁরা হলেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের অষ্টম পর্বের ছাত্র কামাল হোসেন সৌরভ, ইলেকট্রনিক্সের পঞ্চম পর্বের মুরাদ, পাওয়ারের সাবেক ছাত্র শান্ত, ইলেকট্রিক্যালের সাবেক ছাত্র বনি, মেকাট্রনিক্সের সাবেক ছাত্র হাসিবুল ইসলাম শান্ত, ইলেকট্রমেডিক্যালের সাবেক ছাত্র সালমান টনি, একই বিভাগের সপ্তম পর্বের ছাত্র হাসিবুল ও কম্পিউটারের সাবেক ছাত্র মারুফ। বাকি আসামিরা অজ্ঞাত।
পাঁচজন কারাগারে
মামলা দায়েরের পর রাতেই নগরীর বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে ২৫ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। এদের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৪৮, ৩৪১, ৩৫৩ ও ৩২৩ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্যদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচজনকে রোববার আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে বলে জানান ওসি।
গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজন হলেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চম পর্বের ছাত্র আরিফুল ইসলাম আরিফ (২০), উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের সপ্তম পর্বের বাঁধন রায় (১৯), ছাত্রলীগ কর্মী ও ইলেকট্রমেডিক্যাল বিভাগের পঞ্চম পর্বের সোহেল রানা (২০), ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের পঞ্চম পর্বের সাফি শাহরিয়ার (২৪), সোহেল রানা (২২) এবং ইলেকট্রনিক্স বিভাগের তৃতীয় পর্বের রিপন আলী (২০)।

ছবি : এনটিভি
সৌরভ বহিষ্কার
এদিকে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নেতৃত্বদানকারী শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভকে শনিবার রাতেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়। শনিবার রাতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে মহানগর ছাত্রলীগের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়। জরুরি ওই সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি রকি কুমার ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ওই সভায় পলিটেকনিকের ঘটনা তদন্তের জন্য মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ কুমার রায়কে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্তে ছাত্রলীগের আর কারো বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কার্যক্রম স্থগিত
রোববার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ীভাবে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।
ইনস্টিটিউট থেকে বহিষ্কার
এ দিকে, শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার সঙ্গে জড়িত পলিটেকনিক শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সৌরভসহ ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মীকে ইনস্টিটিউট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলে দেওয়ার ঘটনার তদন্ত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (পিআইডাব্লিউ) এস এম ফেরদৌস আলমকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) ড. মো. নুরুল ইসলাম ও রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. ওমর ফারুক। তদন্ত করে কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা রোববার বিকেলে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে সঙ্গে কথা বলেন।
টর্চার সেল
রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিন তলা প্রশাসনিক ভবনের উত্তর পাশের দ্বিতীয় তলা ভবনের নিচতলার ১১১৮ নম্বরটি ছাত্রদের কমনরুম। পাশের ১১১৯ নম্বর রুমটি সবসময় তালাবদ্ধ থাকতো। রুমের একটি চাবি থাকত ছাত্রলীগের নেতাদের হাতে। রুমটি ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। রোববার ওই রুমের তালা খুললে দেখা যায়, টেবিলের ওপর কয়েকটি বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও পাইপ পড়ে আছে।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কারো ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাগ করলে তাকে সাধারণত প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাদের দলীয় টেন্টে চড়-থাপ্পড় দেওয়া হতো। এর চেয়ে কাউকে বেশি শাস্তি দিতে হলে তাকে টর্চার সেলে ধরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারপিট করা হতো।
রোববার পলিটেকনিক ক্যাম্পাসে গেলে, অনেক শিক্ষার্থীই মুখ খোলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে। তবে ভয়ে তারা কেউ নিজেদের পরিচয় দিতে চাননি। তাঁরা জানান, সংবাদ মাধ্যমে নাম এলে ছাত্রলীগ তাদের চিহ্নিত করতে রাখবে। ইনস্টিটিউটের বাইরে তাঁকে পেলে ছাত্রলীগ এর প্রতিশোধ নেবে।
এক ছাত্র জানায়, কয়েক মাস আগে তিনিসহ চারজন ছাত্রদের কমনরুমে ক্যারম খেলছিলেন। হঠাৎ পাশের ১১১৯ নম্বর রুম থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পান তারা। কমনরুমের বারান্দায় গিয়ে দেখেন ১১১৯ নম্বর রুমের দরজা খোলা। এক ছাত্রকে মেঝেতে ফেলে ১০ জন মারছে। তাদের দেখতে পেয়ে ছাত্রলীগের এক ছেলে রুম থেকে বাইরে এসে চার ছাত্রকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে যা দেখেছে তা বাইরে প্রকাশ না করার জন্য শাসিয়ে যান।
অপর এক ছাত্র জানান, চতুর্থ পর্বের মিডটার্ম পরীক্ষায় ছাত্রলীগের এক নেতাকে খাতা দেখে লিখতে দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁর বন্ধুকে টর্চার সেলে ধরে নিয়ে যান ছাত্রলীগের ওই নেতাসহ কয়েকজন। সেখানে তাঁকে এক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়। পরে তাঁর সহপাঠীরা যখন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়, তখন নির্যাতিত ছাত্রটি হাঁটতে পারছিলেন না।
ছাত্রলীগের এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা অহরহই ঘটতো রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। ক্লাস চলাকালে শিক্ষকদের সামনে থেকে টার্গেট করা শিক্ষার্থীকে বের করে নিয়ে গিয়ে মারধর করত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কোনো ছাত্রীকে ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মী পছন্দ করলে তার সঙ্গে প্রেম করতে বাধ্য করা হতো বলেও অভিযোগ করেছে অনেক ছাত্রী।
শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ স্বীকার করেছেন রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা। কিছুদিন আগে এক শিক্ষার্থীকে দলীয় টেন্টে মারধর করার প্রতিবাদ করায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়েছিলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে ওই শিক্ষক শিক্ষকদের কমনরুমে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পান।
শিক্ষকরা জানান, পরীক্ষার হলে নকল করতে না দিলে, অন্যদের খাতা দেখে লিখতে না দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষকদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করত। এ ছাড়া ফেল করা ছাত্রদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকে পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের চাপ দিত ছাত্রলীগের নেতারা। শিক্ষকদের কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী হিসেবে চিহ্নিত করার হুমকি দিত ছাত্রলীগের নেতারা। শিক্ষকরা কোন এলাকার কোন বাড়িতে থাকেন, পরিবারে কে কে আছেন, প্রতিবাদকারী শিক্ষকদের সেসব কথা শুনিয়ে দিতেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শিক্ষকদের কেউ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ঘাটতে যেতেন না।
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের এসব অপকর্মের কথা জেনেও এতদিন ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি বলে স্বীকার করেছেন খোদ অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ। তিনি বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাঁকে অনেক সময়ই ছাত্রলীগের নির্যাতনের কথা জানালেও ভয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেওয়ার সাহস পেত না। আর লিখিত অভিযোগ ছাড়া তাঁর পক্ষে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া
সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
ছাত্রলীগের এসব নির্যাতনের বিষয়ে ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।