সারা বছর পড়ল গার্হস্থ্য, পরীক্ষা দিল কৃষি শিক্ষা

সারা বছর পড়েছে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়। কিন্তু জেএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে হলে এসে পেয়েছে কৃষি শিক্ষার প্রশ্ন। কারণ তাদের শিক্ষকরা গার্হস্থ্য বিজ্ঞানের পরিবর্তে রেজিস্ট্রেশন করেছেন কৃষি শিক্ষা।
এখন শিক্ষকদের ভুলের খেসারতে ফলাফল খারাপের আশঙ্কা করছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার পাকুটিয়া বিসিআরজি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯০ শিক্ষার্থী। তারা আজ মঙ্গলবার মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে জেএসসির (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা দিতে বাধ্য হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এ বছর শুরুতে পাকুটিয়া বিসিআরজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৮০ জন জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে। পরীক্ষায় বাধ্যতামূলক বিষয়ের সঙ্গে ঐচ্ছিক কৃষি শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান, আরবি, সংস্কৃত ও পালি থেকে যেকোনো একটি বিষয় নির্ধারণ করা হয়। এতে ওই বিদ্যালয়ের ১৮০ শিক্ষার্থীই গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয় নির্ধারণ করে রেজিস্ট্রেশন করে। কিন্তু, শিক্ষকরা বিষয় ভুল করে ৯০ শিক্ষার্থীর কৃষি শিক্ষা বিষয়ে রেজিস্ট্রেশন করেন। সারা বছর ১৮০ শিক্ষার্থীই গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করে। জেএসসি পরীক্ষার আগে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র হাতে পেয়েও বিষয়টি টের পায়নি তারা। শিক্ষকরাও তাদের এ বিষয়ে কিছু বলেননি।
অন্যান্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে গতকাল সোমবার কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র থেকে তারা আজ মঙ্গলবারের পরীক্ষার বিষয়টি জানতে পারে। শিক্ষকরা আজ মঙ্গলবারের প্রবেশপত্রে উল্লেখিত বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে বলে শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেন। এতে বিপাকে পড়ে ওই পরীক্ষার্থীরা।
আজ পরীক্ষা শেষে রুপা আক্তারসহ অনেকে জানায়, সারা বছর গার্হস্থ্য বিজ্ঞান পড়ে পরীক্ষা দিতে হলো কৃষি শিক্ষা। একদিন বই পড়ে কি ভালো পরীক্ষা দেওয়া যায়? শিক্ষকদের ভুলের খেসারতে এখন আর ভালো ফলাফলের আশা করছে না তারা।
পাকুটিয়া বিসিআরজি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুল করিম মিয়া ভুল স্বীকার করে বলেন, বছরের শুরুতে কৃষি শিক্ষা বই না পাওয়ায় শিক্ষা অফিস গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বই সরবরাহ করে। পরিকল্পনা ছিল বোর্ড থেকে বিষয়টি সংশোধন করে আনা হবে। বিভিন্ন কারণে তা আর সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
কেন্দ্র সচিব বালিয়াটি ঈশ্বর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আছালত জামান খান বলেন, কেন্দ্র থেকে ওই পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছুই করার ছিল না। প্রবেশপত্র দেখে তাদের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে। এতে ওই ৯০ শিক্ষার্থীই কৃষি শিক্ষা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিগার সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র প্রায় এক মাস আগে এসেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা কেন এত বড় ভুল দেখতে পাননি, তা বুঝে আসছে না। শিক্ষকদের ভুলে ওই ৯০ পরীক্ষার্থীর মারাত্মক ক্ষতি হলো। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের লিখিত অভিযোগ পেলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।