বাকৃবিতে সৃজনশীল উৎসব ‘মুহূর্তের মায়াজাল’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সৃজনশীল সংগঠন ‘অ্যাস্থেটিক বাউ’র আয়োজনে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক আয়োজন ‘মুহূর্তের মায়াজাল: ফটো, আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্ট এক্সিবিশন সিজন-২’।
গতকাল শুক্রবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা চত্বরে এই আয়োজনে অংশ নিতে শিক্ষার্থী-শিক্ষকরা ভিড় করেন উৎসবমুখর পরিবেশে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল গড়াতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে দলে দলে এসে জমায়েত হন। গান, কবিতা, আলোর ঝলকানি আর নানা আয়োজন যেন পুরো ক্যাম্পাসকে পরিণত করে এক আনন্দমেলায়। কেউ পিঠা বিক্রি করছে, কেউ নিজ হাতে আঁকা ছবি বা তৈরি কারুকাজ প্রদর্শন করছে, আবার কেউ বন্ধুদের সঙ্গে কাটাচ্ছে ছুটির এক স্মরণীয় বিকেল।

অনুষ্ঠানে ছিল লাইভ ফটো কনটেস্ট, বায়োস্কোপ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ১ হাজার কাপ চায়ের আয়োজনসহ নানা চমকপ্রদ উপকরণ। শিক্ষার্থীরা তাদের রঙতুলির আঁচড়ে, হাতে তৈরি ক্রাফট এবং স্মার্টফোনে ধারণ করা ছবির মাধ্যমে ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে থাকা জীবনের সৌন্দর্য, অনুভব ও সৃজনশীলতা ফুটিয়ে তোলেন।
প্রদর্শনীর ছবি ও আর্ট-ক্রাফট বিভাগে সেরা তিনটি করে মোট ৬টি শিল্পকর্মকে পুরস্কৃত করা হয়। অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় সম্মানসূচক সনদ। এ আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।
অনুষ্ঠান সম্পর্কে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. রিফাত আলী বলেন, গত বছর আমরা ‘অনুভবের আয়না’ শিরোনামে সফল একটি আয়োজন করেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এবার আমরা ‘মুহূর্তের মায়াজাল’ আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, শিল্পচর্চা ও সংস্কৃতিপ্রীতির বিকাশে অনুপ্রাণিত করা আমাদের উদ্দেশ্য।

কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে এ ধরনের আয়োজন খুব একটা হয় না। তাই এই অনুষ্ঠান এক নতুন অনুভূতি এনে দিয়েছে। শত ব্যস্ততার মাঝেও এই আয়োজন আমাদের একটু প্রশান্তি দিয়েছে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী জাহিন ইজমা বলেন, শুধু পড়ালেখা নয়, চারু ও কারুকলায়ও আমরা অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে নই। এই আয়োজন তারই প্রমাণ। তাই এটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
সংগঠনের সভাপতি ও কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসনীন জাহান বলেন, অ্যাস্থেটিক বাউ এমন একটি সংগঠন, যারা ফটোগ্রাফি ও ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরছে এবং শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সহায়তা করছে। আজকের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নিজের হাতে আঁকা কিংবা ফোনে তোলা ছবি নিয়ে এসেছে, যা দেখে আমি সত্যিই মুগ্ধ। ক্যাম্পাসজুড়ে আজ এক উৎসবের আবহ।