ইবিতে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৩৫ শিক্ষার্থী

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ডিনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। আটটি অনুষদের ৩৫ জন শিক্ষার্থী ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। আজ শনিবার (২৪ মে) দুপুর ১২টায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে এ পদক, সনদ ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ডিনস কমিটির সভাপতি ও থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. অ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক।
এ ছাড়া আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খোন্দকার তৌহিদুল আনাম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বাবলী সাবিনা আজহার।
পদক প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় অর্থনীতি বিভাগের সুমাইয়া আফরিন বলেন, ‘আমি প্রথম থেকে চেষ্টা করেছিলাম ভালো করার, কিন্তু এত ভালো জায়গায় আসব আশা করিনি। চেয়েছিলাম আব্বুর সঙ্গে এই ডিনস অ্যাওয়ার্ড নিতে আসব, কিন্তু সম্ভব হলো না। তিনি আর নেই। কিন্তু আম্মুর সঙ্গে এসেছি আজ। আর সবার উদ্দেশ্য বলব—হার্ডওয়ার্ক, ড্রিম আর ডেডিকেশন দরকার, জীবনে তবেই সফলতা আসবে।’
অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি জাতির উন্নয়ন নির্ভর করে সে দেশের মেধাবী মানুষদের যথাযথ ভূমিকার উপর। তিনি বলেন, ‘মেধাবীদের এই ভূমিকা বিভিন্নভাবে প্রতিফলিত হয়। মেধাবীরা নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে এবং গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা সমাজের সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধান বের করে। দেশে নীতি-নির্ধারক, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, চিকিৎসক প্রভৃতি ক্ষেত্রে মেধাবী তৈরি করছি আমরা।’
অনুষ্ঠানে উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “যে অবস্থায় পূর্বে এদেশ ছিল, সেখানে মেধার মূল্যায়ন তো অনেক দূরে, এই ‘মেধাবী’ শব্দটিই আমরা ভুলতে বসেছিলাম। সেখান থেকে দেশ আজ উঠে এসেছে। মাঝখানে হারিয়ে গেছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। সেই ঝরে যাওয়া প্রাণের বিনিময়ে তোমাদের এই মেধার মূল্যায়ন করা হচ্ছে। তোমাদের অঙ্গীকার করতে হবে—দেশের জন্য যারা প্রাণ দিয়েছে, সেই দেশের উন্নয়নে তোমরা কাজ করে যাবে। তোমাদের মতো মেধাবীদেরকেই সমাজের অন্যায়, বৈষম্য ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলে ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করতে হবে।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘মেধাবীরাই পৃথিবী বদলেছে, মেধাবীরাই বাংলাদেশ বদলাবে। মেধাবীরা সমাজের অগ্রগামী শক্তি। তাদের জ্ঞান, চিন্তাশক্তি ও উদ্ভাবনী দক্ষতা সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এই মেধাবীরা যাতে আশাহত না হয়, সেজন্য তাদেরকে যোগ্য সম্মান দিয়ে উৎসাহিত করতে হবে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘এই মেধার হিসাব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আজকের পরিবর্তিত বাংলাদেশ। মেধাবীদের সুযোগ করে দিতেই সেদিন সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল। সে সংগ্রাম দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছড়িয়ে গিয়ে পরিণত হয়েছিল সাধারণ জনতার অভ্যুত্থানে, যেখানে প্রায় দুই হাজার মানুষ শহীদ হন। মেধাবীদেরকে সেই আন্দোলনকে, সেই প্রাণ বিসর্জনকে সম্মান জানাতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না।’