সালাম মূর্শেদীর সম্পদ ১৩৭ কোটি টাকার বেশি
গত পাঁচ বছরে খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম মূর্শেদীর আয় ও সম্পদ দুটোই বেড়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। নির্বাচনী হলফনামা থেকে জানা গেছে, পাঁচ বছরের ব্যবধানে প্রায় ৪৩ কোটি টাকার সম্পদ বেড়েছে সালাম মূর্শেদীর।
খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া এই প্রার্থী এবারের হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তার বার্ষিক আয় আট কোটি দুই লাখ টাকা। তার স্ত্রীর আয় এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বর্তমানে সালাম মূর্শেদীর ১৩৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর ১৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকার এবং নির্ভরশীলের ২৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে।
হলফনামায় নিজেকে পাবলিক-প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পোশাক শিল্প, বস্ত্র শিল্প, ব্যাংক, হাসপাতালের পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তার সম্পদের মধ্যে রয়েছে হাতে নগদ ২৯ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা রয়েছে চার কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৯৪ কোটি ৪২ লাখ টাকার। গাড়ি, গৃহসম্পত্তি ছাড়াও অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ২৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের ভবন। ব্যাংকে তার ঋণ রয়েছে সাত কোটি ৫৪ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর কাছে এক কোটি ৮৬ লাখ নগদ টাকা, ব্যাংকে ১৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকা এবং আট কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার রয়েছে। অন্যান্য সম্পদ রয়েছে সাত কোটি ৩৩ লাখ টাকা মূল্যের।
২০১৮ সালের নির্বাচনে সালাম মূর্শেদীর জমা দেওয়া হলফনামায় তথ্য ছিল, তিনি বাসা ভাড়া, ব্যবসাসহ বিভিন্ন খাত থেকে প্রতি মাসে ৪৭ লাখ টাকা আয় করতেন। হলফনামায় তিনি ৮৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সম্পদের হিসাব দিয়েছিলেন। স্ত্রী ও সন্তানদের সম্পদ দেখিয়েছিলেন ২৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার। বছরে নিজের আয় ছিল পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে তার আয় ছিল ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা। তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আয় ছিল ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে বছরে নিজের আয় ছিল দুই কোটি ৬৮ লাখ টাকা; নির্ভরশীলদের আয় ছিল ১৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে নিজের আয় ছিল দুই কোটি ৮৯ লাখ টাকা; নির্ভরশীলদের আয় ৪৭ লাখ টাকা।
এছাড়া, সালাম মূর্শেদীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল একটি ভবন, যার মূল্য ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ছিল একটি ভবন, মূল্য ৩৪ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল নিজের নামে নগদ সাড়ে ১৩ লাখ টাকা; স্ত্রীর নামে চার লাখ টাকা; নির্ভরশীলদের নামে এক লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে জমা ছিল তিন কোটি ৬৫ লাখ টাকা; স্ত্রীর নামে ১২ লাখ টাকা ও নির্ভরশীলদের নামে ১৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। কোম্পানির শেয়ার ছিল নিজের নামে ৬৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকার; স্ত্রীর নামে ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকার; নির্ভরশীলদের নামে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার। সোনা ছিল নিজের সাড়ে ৯ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর চার লাখ ২৫ হাজার টাকার। আসবাবের মূল্য ছিল ৩০ হাজার টাকা। অন্যান্য অস্থাবর সম্পদ ছিল নিজের নামে পাঁচ কোটি ৪৭ লাখ টাকার এবং স্ত্রীর নামে এক কোটি ২৮ লাখ টাকার। ব্যাংকে নিজের ঋণের পরিমাণ ছিল পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তাঁর ব্যবহৃত গাড়ির দাম দেখানো ছিল সাড়ে চার লাখ টাকা।