জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না : মির্জা ফখরুল
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/05/29/fakhrul.jpg)
ক্ষমতাসীরা যত সমালোচনাই করুক, জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস থেকে কখনো মুছে ফেলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
দলের প্র্রতিষ্ঠাতার ৪১ তম এই শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ১০ দিনের যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে তা শুরু হলো।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ঢাকার বাইরে যাচ্ছি, আমরা বিভিন্ন জেলাগুলোতে সম্মেলন করতে যাচ্ছি—আমরা দেখছি মানুষের কী আকুতি, কী আবেগ। কালকে যখন আমি যশোর থেকে ঝিনাইদাহ যাচ্ছিলাম, পথে পথে মানুষ চতুর্দিকে দাঁড়িয়ে ছিল। মানুষে সেই পুরনো অবস্থায় ফিরে যেতে চায়, যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।’
ফখরুল বলেন, ‘আজকে জিয়াউর রহমান সাহেবকে যে যত ইচ্ছা বলুক, তাকে খলনায়ক বলুক, পাকিস্তানি চর বলুক, আর তাকে সামরিক জান্তা থেকে উঠে আসার কথা বলুক, তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ, এই দেশের মানুষের হৃদয়ের মধ্যে তিনি প্রতিথ হয়ে গেছেন। জিয়াউর রহমানকে ইতিহাস ধারণ করেছে, তাকে কখনো মুছে ফেলা যাবে না।’
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হচ্ছেন আমাদের সেই আলোকবর্তিকা। যাঁর দিকে তাঁকিয়ে আমরা কথা বলব। তাঁর তো ব্যর্থতা নেই। তিনি শহীদ হয়ে গেছেন। কিন্তু, তাঁর আদর্শ তো ফুরিয়ে যায়নি। তিনি যে দর্শন দিয়ে গিয়েছিলেন—বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, তিনি যে দর্শন দিয়েছিলেন আমাদের উন্নয়নের রাজনীতি, তিনি যে দর্শন দিয়েছিলেন—মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে, আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনোদিন আমরা আপোষ করব না, সেই রাজনীতি তো টিকে আছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের আরেকজন নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কথাটা আমার প্রায় মনে হয় যে, তিনি সেই পতাকাটা হাতে তুলে নিয়েছিলেন, যে পতাকা শহীদ জিয়ার পতাকা ছিলো—স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র আর উন্নয়নের পতাকা ছিল। ওই পতাকা নিয়ে দেশনেত্রী ৯ বছর সংগ্রাম করেছেন, দীর্ঘ সংগ্রাম। রাস্তায়, পথে-প্রান্তরে, আমাদের এই নেতাদেরকে সঙ্গে নিয়ে, ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সংগ্রাম করেছেন এবং সফল হয়েছেন ১৯৯০ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে আবার যখন আমাদের সবচেয়ে বড় সংকট আমাদের দেশেরগণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গেছে। আমাদের সমস্ত অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে গেছে, আমাদের সব কিছু উলট-পালট হয়ে যাচ্ছে, ম্লান হয়ে যাচ্ছে, তখন আবার আমাদের সামনে এসে আবির্ভুত হয়েছেন তারই যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান। যিনি আমাদেরকে সুদূর থেকে পথের দিশা দিচ্ছেন।’
জিয়াউর রহমান জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তিনি আমাদের স্বপ্নদ্রষ্টা। যেখানেই যেতেন উৎসাহ দিতেন, উদ্দিপনা দিতেন—একটা আম গাছ লাগাও, নিজেকে স্বাবলম্বি করার চেষ্টা করো। নিজে খাল কাটতেন, মাইলের পর মাইল পায়ে হেটেছেন…। এটাইকে বলে পথ প্রদর্শক, এটাই বলে ফিলোসফার, এটাই বলে লীডার। তাই যে যা বলতে চেষ্টা করুক কোনো মতেই তারা শহীদ জিয়াকে মুছে ফেলতে পারবেনা, বিলীন করতে পারবে না।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।