বিশ্বকাপে মায়ের প্রতি অদ্ভুত ভালোবাসা মরক্কোনদের

জন্মদাত্রী মা, এক আবেগী সত্ত্বা। নয় মাস গর্ভে ধারণ করে প্রসব বেদনার অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে নবজাতককে পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ করেন মা। তবে জাগতিক পৃথিবী বড় নিষ্ঠুর। কখনও কখনও সেই মায়ের চোখ সিক্ত হয় সন্তানের দেওয়া কষ্টে। আবার সন্তানের আনন্দেও যে মায়ের চোখ হেসে ওঠে, তারই নজির রেখেছেন মরক্কোর খেলোয়াড়েরা।
কাতারে চলছে ফুটবল মহাযজ্ঞ। এমন আসরে এসে ইতিহাস গড়ে, ভাঙে প্রায় প্রতিটি দলই। এমনই এক দল মরক্কো। প্রায় নয় দশকের ইতিহাসে নিজেদের নামটি খোদাই করে লিখিয়েছেন তাঁরা। আফ্রিকার দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দলটি। কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর মতো তারকার দেশকে হারিয়েছে ১-০ গোলে।
এর আগে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ২–০ ব্যবধানে জিতে মাকে স্মরণ করেছিলেন মরক্কোর ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি। মায়ের প্রতি সে ভালোবাসা রাতারাতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। এবার পর্তুগালের বিপক্ষে জয় পেয়ে মায়ের সঙ্গে উদযাপন করলেন স্ট্রাইকার সোফিয়ান বাউফল। গ্যালারি থেকে মাকে নিয়ে এলেন সোফিয়ান। সবুজ গালিচায় নেমে মা উল্লাস করছিলেন, আর আনন্দে চোখ সিক্ত হয়ে আসছিল বারবার।
সন্তানের অর্জনের পিছনে বাবা-মায়ের ত্যাগ হয়তো থাকে পর্দার ওপারে। এমন কিছু হৃদয় ছোঁয়া ঘটনা আছে আশরাফ হাকিমির জীবনেও। মা সাইদা মৌ, ছেলেকে ফুটবলার তৈরি করবেন বলে স্পেনে ঘর পরিষ্কার করতেন। আর বাবা রাস্তায় জিনিসপত্র বিক্রি করতেন। শত কষ্ট সহ্য করেও ছেলেকে মাঠের জন্য তৈরি করতে পিছনে থেকেছেন সর্বদা। তাই বিশ্বের কোটি মানুষের সামনে সেই মমতাময়ী মাকে স্মরণ করে, ভালোবাসার চুম্বনে সিক্ত করে হাকিমি জানালেন কৃতজ্ঞতা।
কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সোফিয়ান বাউফলও। খেলার মাঠে মরক্কোনদের এমন মায়ের প্রতি ভালোবাসায় আবেগ আপ্লুত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। সেই সকল মানুষের কাছেও এই বার্তা পৌঁছে গেছে যে, মাকে এভাবেই স্মরণীয় করে রাখতে হয়। আগামী ১৪ ডিসেম্বর রাত ১টায় কাতারের আল বায়াত স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় ম্যাচে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে মরক্কো।