স্বামীর অনুপ্রেরণায় বিসিএস ক্যাডারের স্বপ্নপূরণ লাবনীর
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/08/04/bisies_kyaaddaar_caadpur.jpg)
স্বামীর প্রবল ইচ্ছে, অগাধ বিশ্বাস ও ভালোবাসায় সাফল্যের চূড়ায় লাবনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার লাবনী স্বামীর অনুপ্রেরণায় ৪১তম বিসিএসের সদ্য ঘোষিত ফলাফলে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার উত্তর সিকিরচর গ্রামের সন্তান লাবনী। বাবা আবদুল খালেক মিজি ও মা তাসলিমা বেগম। পরিবারের দুই ভাই-বোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ তিনি। ছোট ভাই তাইজুল ইসলাম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে অধ্যয়নরত।
লাবনী পড়াশোনা শুরু করেন নারায়ণগঞ্জের পাগলার আহসান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। তার পড়াশোনার ফলাফল সবসময় ছিল চোখ ধাঁধানো। ২০০৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ এবং মেধাতালিকায় বোর্ডের অধীনে বৃত্তি পান। এরপর ভর্তি হন দনিয়া কলেজে। একাদশ শ্রেণিতেও ভালো ফলাফলের চেষ্টা অব্যাহত থাকে। ২০১১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়ে একই বোর্ডের অধীনে বৃত্তি পান লাবনী। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে ১ম শ্রেণিতে ২০১৬ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। একই বিভাগ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে কৃতিত্বের ধারা অব্যাহত রাখেন লাবনী।
এর আগে ২০১১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল ইউনিয়নের পূর্ব লালপুর গ্রামের নাজির সাহেবের বাড়ির মো. রফিকুল ইসলামের বড় ছেলে মো. ফকরুজ্জামান আরিফের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন আয়েশা আক্তার লাবনী। আরিফ দীর্ঘ সময় ধরে দেশের স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন। হাজারো ব্যস্ততায় সব সময় স্ত্রীকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন তিনি।
স্বামীর অনুপ্রেরণার কথা বলতে গিয়ে লাবনী বলেন, ‘যেকোনো সফলতায় একজন বন্ধু পাশে থাকা দরকার। সে দিক থেকে আমি খুব ভাগ্যবান। কারণ, আমার স্বামী আগে আমার বন্ধু তারপর স্বামী। তার সব সময় বিশ্বাস ছিল একাডেমিক সফলতার পাশাপাশি বিসিএসে ভালো করতে পারব। তার এই বিশ্বাস আমার আত্মবিশ্বাসকে আরও বাড়িয়ে দিত। আমার আজকের এই সফলতায় তার অবদান অনস্বীকার্য।’
স্বপ্ন জয়ের গল্পে লাবনী বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশের মানুষের জন্য কিছুর করার। সেই আগ্রহকে পুঁজি করেই এগিয়ে চলি। ২০১১ সালে আমার বিয়ে হবার পর ২০১৩ সালে আমার বড় মেয়ের জন্ম হয় এবং ২০২০ সালে আমার ছোট মেয়ের জন্ম। তাদের সঙ্গে নিয়েই আমার বিশ্ববিদ্যালয় ও বিসিএস যাত্রা চালিয়ে যাই। জীবনের কঠিন এই সময়ে পুরোটা সময়জুড়ে স্বামীর সমর্থন পেয়েছি। আর তার প্রবল আগ্রহ এবং ইচ্ছা আমার চলার পথকে আরও গতিময় করে তোলে।’
লাবনীর স্বামী ফকরুজ্জামান আরিফ বলেন, ‘আমাদের বহু কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন আল্লাহ পূরণ করেছেন। লাবনী নিজেকে প্রস্তুত করতে পরিশ্রম, মেধা দিয়ে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছেন। আমার দুটি মেয়ে রয়েছে। মেয়ে পরিবার সবাইকে সামাল দিয়ে এই জায়গায় আসা, এটা না দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না। না ঘুমিয়ে রাত জেগে পড়াশোনা করেছে, যার কারণে সে ভালো কিছু অর্জন করেছে। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন, যেন আরও বড় হতে পারে।’