নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে প্রস্তাব দিয়েছিল ঐক্যফ্রন্ট
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দ্বিতীয় দফা সংলাপে বসে ঐক্যফ্রন্টের বেশ কিছু প্রস্তাবে একমত হতে পারেনি সরকার। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাব আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছে।
আজ বুধবার গণভবনে সংলাপে বসে ঐক্যফ্রন্ট তাদের নির্বাচনকালীন প্রস্তাবিত সরকারে একজন প্রধান উপদেষ্টা ও ১০ জন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রাখার প্রস্তাব দেয়। এ সময় লিখিত ওই প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেয় সরকার।
পরে বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসেও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিষয়টির সত্যতা জানান। তিনি বলেন, ‘তাঁরা (ঐক্যফ্রন্ট) বলেছেন, ‘একজন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ১০ জন উপদেষ্টা। এটা তো পরবর্তী ৯০ দিন। এটা মেনে নেওয়া কোনো কারণ নেই… সংবিধানসম্মত…।‘
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য অনুযায়ী, নির্বাচনে প্লেয়িং লেভেল ফিল্ড, সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা, প্রকৃত রাজবন্দিদের মুক্তির বিষয়টি সরকারের পক্ষ থেকে মেনে নেওয়া হয়েছে।
তবে সংলাপ শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। হয়তো তাঁরা পরে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।
বৈঠকে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের মধ্যে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্যের নেতা এস এম আকরাম, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ডা. দীপু মনি, অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
এর আগে গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল গণভবনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ২০ সদস্যের জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সংলাপে বসেছিলেন। সেদিন সংলাপ শেষে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা অভিযোগ করেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে তাঁদের সাত দফা দাবি উত্থাপন করলেও সভা-সমাবেশ নিয়ে কিছু ভালো কথা শোনা ছাড়া সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধান পাননি।
এরপর ছোট পরিসরে সংলাপের জন্য গত রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেয় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এরই অংশ হিসেবে আজকে দ্বিতীয় দফা সংলাপ হয়।