‘অহিংস’ নীতিকে প্রাধান্য দেবে বিএসএফ!

কিশোরী ফেলানীসহ বাংলাদেশি বহু নাগরিককে গুলি করে হত্যার জন্য বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ বাহিনীটির বিরুদ্ধে অন্যায্যভাবে গুলি চালানোরও অভিযোগ আছে। তবে সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিস্থিতির সঙ্গে তাল রেখে নিজেদেরও বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসএফ। সীমান্তে মানবপাচার, চোরাচালান ও গরুপাচার রুখতে তাই ‘অহিংস’নীতি গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। সে ক্ষেত্রে গুলি না করে নিরাপত্তাব্যবস্থা কঠোর করার ভাবনা হচ্ছে।
সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথোপকথনে এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণবঙ্গ সেক্টর বিএসএফের ডিআইজি এসপি তিওয়ারি।
কথোপকথনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে এসপি তিওয়ারির কাছে জানতে চান এই প্রতিবেদক। প্রতিবেদনটিতে সীমান্ত নিরাপত্তায় বিএসএফ অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করছে-এমন কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসএফের ওই কর্মকর্তা বলেন, বাড়তি সদস্য নয়, সীমান্তে কড়া প্রহরা বসানো হবে। তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গরুপাচারের রুট হিসেবে পরিচিত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ এলাকার পেট্রাপোল এবং বসিরহাট মহকুমার ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত। এই দুই এলাকায় গরু ও মানবপাচার ঠেকাতে কড়া নিরাপত্তার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পাচারকারী দেখলেই গুলি করার যে চল ছিল, সেটি বন্ধ করতে চায় বিএসএফ।
এসপি তিওয়ারি জানান, বিএসএফ জওয়ানরা নেহাত বাধ্য না হলে গুলি করে না। বিএসএফ ও বিজিবি সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সীমান্তে নিরাপত্তায় জোর দিতে চাইছে। মূলত দেশের নিরাপত্তার পাশাপাশি পাচারকারীদের আটকানোই জওয়ানদের মূল লক্ষ্য। এ কারণেই সীমান্ত এলাকায় লেজার রশ্মির বেড়া, খাল খনন, অতন্দ্র প্রহরার মতো নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সীমান্ত সফরের সময় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং সীমান্ত নিরাপত্তায় জোর দেওয়ার কথা বলে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই আঁটসাঁট করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নিরাপত্তাব্যবস্থা। বিশেষ করে বাংলাদেশে পাচারের অন্যতম দুই রুটে গত কয়েক মাসে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে গরুপাচার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানান, ‘এই জেলাতে গরু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য এখন অনেক কমে গিয়েছে। আমরা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’
সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সুন্দরবনসংলগ্ন জলসীমানার নিরাপত্তাও জোরদার করেছে বিএসএফ। দিন-রাতের বেশির ভাগ সময়ই স্পিডবোডে করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।