ভারতে করোনা চিকিৎসায় আশা দেখাচ্ছে বায়োকনের ওষুধ

ভারতীয় সংস্থা বায়োকনের তৈরি ওষুধ ‘আইটোলিজুম্যাব’ কোভিড-১৯ রোগীদের ওপর প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বায়োকন জানিয়েছে, ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার অনুমোদন পাওয়ার পর অন্তত ৩০ জনের ওপর ওষুধটি পরীক্ষা করা হয়েছে। তারপরই পাওয়া গেছে ‘আইটোলিজুম্যাব’ প্রয়োগে সাফল্যের খবর।
সংস্থা সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ জানিয়েছে, ‘আইটোলিজুম্যাব’ ইঞ্জেকশনের প্রতিটি ডোজের দাম আট হাজার রুপি। কোর্স সম্পূর্ণ করতে খরচ হবে ৩২ হাজার রুপি।
বায়োকনের দাবি, ‘আইটোলিজুম্যাব’ ব্যবহারে কোভিড-১৯ রোগীর শরীরে অক্সিজেন মাত্রা বাড়ছে, প্রদাহ কমছে দ্রুত। কমছে মৃত্যুর হার। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ৩০ জন রোগীর মধ্যে ২০ জনেরই অবস্থার উন্নতি হয়েছে। বায়োকনের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে গত মে মাস থেকে এ ট্রায়াল শুরু হয়। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স, লোক নায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল, মুম্বাইয়ের কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও বিওয়াইএল হাসপাতালে এ পরীক্ষা চালানো হয়েছিল।
বায়োকনের নির্বাহী চেয়ারপারসন জানিয়েছেন, অনুমোদন পাওয়ার পর থেকে দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে অন্তত ১৫০ জন সংকটাপন্ন কোভিড-১৯ রোগীকে সুস্থ করেছে ‘আইটোলিজুম্যাব’।
লোকনায়ক হাসপাতালের চিকিৎসা বিষয়ক পরিচালক সুরেশ কুমার জানান, ১১ জন রোগীকে ‘আইটোলিজুম্যাব’ ওষুধ দিয়েছেন তাঁরা। ফলও মিলেছে।
‘আইটোলিজুম্যাব’ আসলে সোরাসিস রোগের ওষুধ। বাজারে সারা বছরই পাওয়া যায়। কিন্তু কোভিড-১৯ রোগীকে এ ওষুধ কেন দেওয়া হচ্ছে? গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস মানবদেহে আক্রমণ করার পর দ্রুত শরীরের দখল নিতে থাকে এবং দেহের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধের দেয়াল ভেঙে যেতে থাকে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘সাইটোকিন স্টর্ম’ বলে। একদল গবেষক দেখিয়ে আসছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ কাঠামোর ধ্বংস রুখে দিতে পারে সোরাসিসের ওষুধ ‘আইটোলিজুম্যাব’।
তবে, চিকিৎসকরা ‘আইটোলিজুম্যাব’ করোনার মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধু আশঙ্কাজনক অবস্থার রোগীদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকা অবস্থায় এ ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। রোগীর অক্সিজেন সাপোর্ট থাকলে এ ওষুধ ব্যবহারের করতে পারবেন চিকিৎসকরা।
বায়োকনের ‘আইটোলিজুম্যাব’-এর মূল পেটেন্ট বা স্বত্ত কিউবার সেন্টার ফর মলিকিউলার ইমিওনোলজির। ২০০৬ সালে এ ওষুধটি তৈরি হয়। ২০১৩ সাল থেকে ওষুধটির ব্যবহার চলছে।