যেভাবে ইয়াজিদি মেয়েদের ধরে নিয়ে গেল আইএস
ইয়াজিদি মেয়েদের কান্না হয়তো নরকের কান্নাকেও হার মানাবে। বাঁচার জন্য, বাঁচানোর জন্য চিৎকার করে কাঁদছে ইয়াজিদিদের সবাই। তবু রক্ষা নেই। বাবা-ভাইয়ের চোখের সামনেই ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের কম বয়সী মেয়েদের অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে গেল ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা।
শুধু তাই নয়। নির্মম নির্যাতনের এই ভিডিওটি আবার নিজেদের ওয়েবসাইটে ফলাও করে প্রচার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এই জঙ্গি সংগঠন। সেই ভিডিওটি গত বুধবার ‘ইয়াজিদি অ্যাকটিভিস্ট’ নিজেদের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করে। সেখান থেকে ভিডিওটি নিয়ে প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার জানায়, আইএসের ‘যৌনদাসী’ হওয়ার ভয়াবহ পরিণতি থেকে বাঁচতে প্রাণপণে চিৎকার করছিল ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের অসহায় কম বয়সী মেয়েগুলো। এই কান্না মন গলাতে পারেনি আইএস জঙ্গিদের। একে-৪৭ রাইফেলের মুখে চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে তাদের নিয়ে যায় ‘জিহাদিরা’।
এই নির্মম মুহূর্তে আবার ওপরের বেলকনি থেকে আইএসের পতাকা উড়িয়ে দেয় রকেটলঞ্চার বহনকারী এক জঙ্গি।
‘ইয়াজিদি অ্যাকটিভিস্ট’-এর পেসবুক পেজ থেকে জানা যায়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আইএসের প্রভাব-প্রতিপত্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের পাঁচ হাজারের বেশি কম বয়সী মেয়েকে ‘যৌনদাসী’ বানানোর জন্য অপহরণ করে নিয়ে গেছে আইএস।
এই নির্মম নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না গর্ভবতী নারীরাও। গর্ভবতী নারীদেরও ধরে নিয়ে গিয়ে আইএসের নিজস্ব চিকিৎসকদের দিয়ে মধ্যযুগীয় পন্থায় গর্ভপাত করানো হচ্ছে। যাতে তাঁরা দ্রুত যৌনকর্ম করার উপযোগী হয়।
২০১৪ সালের নভেম্বরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত ৮৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে প্রথম ইয়াজিদি যৌনদাসীদের ওপর আইএস যোদ্ধাদের নৃশংস নির্যাতনের চিত্র ফুটে ওঠে। এই প্রতিবেদনেও বলা হয়, শিশুদের আইএস যোদ্ধাদের কাছে বিক্রি করা হয় অথবা ‘উপহার’ হিসেবে দেওয়া হয়। এরপর গত বছর আইএসের প্রচারপত্র ‘দাবিকে’ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে মানুষ কেনাবেচার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলা হয়েছে, তারা ইসলামের নিয়ম অনুযায়ীই এ কাজ করছে।