বাংলাদেশ-বাহরাইন ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট কাপ অনুষ্ঠিত
বাহরাইনের আলবা ক্লাব মাঠে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাহরাইন ক্রিকেট ফেডারেশন যৌথভাবে আনন্দঘন পরিবেশে ‘বাংলাদেশ-বাহরাইন ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট কাপ ২০২৪’ এর আয়োজন করেছে। প্রবাসী বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীর পাশাপাশি বাহরাইনের বিভিন্ন প্রান্ত হতে বিদেশি অনেক দর্শক বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মাঝে অনুষ্ঠিত এই বিশেষ প্রীতি ম্যাচটি উপভোগ করার জন্য অনেক উৎসাহ নিয়ে মাঠে উপস্থিত হন। বাহরাইনের মাটিতে এটা ছিল একটি ভিন্নধর্মী আয়োজন, যা ইতিপূর্বে আর কখনো দেশটিতে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী এবং মহামহিম রাজা হামাদ বিন ঈসা আল খলিফা তাঁর সিংহাসনে উপবিষ্ট হওয়ার রজতজয়ন্তীকে বিশেষভাবে স্বরণীয় করে রাখা লক্ষ্যে এ খেলার আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয়ত, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস আবার এই দিনটি হলো বাহরাইনের জাতীয় দিবস, তাই উভয় দেশের নিকট বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনটিকে একটু ভিন্নভাবে উদযাপনের জন্য আয়োজন করা হয়েছে এই প্রীতি ম্যাচটি।
ম্যাচটি উপভোগ করার জন্য বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্য হতে অন্যতম ছিলেন বাহরাইন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়ান ও প্যাসিফিক বিষয়ক প্রধান রাষ্ট্রদূত মুনিরা নোফাল আল দোসেরি, বাহরাইন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হুসেন জানহি, বাহরাইন ক্রিকেট ফেডারেশনের উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনসুর, প্রেসিডেন্ট সামি আলি, রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক মিশনের উপপ্রধান এবং কূটনৈতিক কোরের অন্যান্য কর্মকর্তা, মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বাহরাইন সরকারের অন্যান্য সংস্থা কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) উন্নয়ন ম্যানেজার এবং বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল শুভেচ্ছা বার্তা প্রেরণ করেন।
চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এ কে এম মহিউদ্দিন কায়েস তাঁর স্বাগত বক্তব্যে উপস্থিত সব প্রবাসীসহ বিদেশি সব অতিথিদেরকে ‘বাংলাদেশ-বাহরাইন ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট কাপ ২০২৪’ ম্যাচটি উপভোগ করার জন্য আগত সবাইকে স্বাগত জানান। বিশেষভাবে ম্যাচে অংশগ্রহণকারী উভয় দলকে তিনি অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘আজকের ম্যাচটি ছিল ক্রীড়াঙ্গন এবং দুই দেশের মাঝে বন্ধুত্ব প্রকাশের একটি অন্যতম আয়োজন। এটি দুই দেশের কূটনীতি ও বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।’
বাহরাইন ক্রিকেট ফেডারেশনের উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনসুরও উভয় দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘ম্যাচটি বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ক ফুটিয়ে তোলার অন্যতম মাধ্যম।’
বাহরাইন ক্রিকেট ফেডারেশনের সভাপতি সামি আলি বলেন, ‘এই খেলায় উভয় দলের প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহণ এবং খেলোয়াড়দের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ আচারণ ছিল বিষেশভাবে লক্ষ্যণীয়। এ ছাড়া এই প্রীতি ম্যাচের মাধ্যমে অনুধাবন করা যায়, কীভাবে ক্রিকেটের সীমানা পেরিয়ে মানুষকে বন্ধুত্বের সূত্রে একত্রিত করা যায়।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়ান ও প্যাসিফিক বিষয়ক প্রধান রাষ্ট্রদূত মিসেস মুনিরা নোফাল আল দোসেরি তার বক্তব্যে বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে দীর্ঘ ও স্থায়ী বন্ধুত্বকে আরও সুদৃঢ় করার নিমিত্তে এমন একটি চমৎকার আয়োজনের জন্য দূতাবাস ও বাহরাইন ক্রিকেট ফেডারেশনকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। আগামী বছরগুলোতে দুই দেশের মাঝে অব্যাহত সহযোগিতার বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
বাহরাইন প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হুসেন জানহি বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের জুন থেকে চলমান ধারাবাহিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কার্যক্রমের জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচটি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বন্ধুত্বের জন্য একটি অন্যতম প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ-বাহরাইন ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট ম্যাচটিতে ছিল উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিযোগিতা, যেখানে উভয় দলই তাদের ব্যতিক্রমী দক্ষতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শন করে। দুই দলের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে বাহরাইন দল চ্যাম্পিয়ন কাপ লাভ করে। বাহরাইনের বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাহরাইন ক্রিকেট ফেডারেশন উভয় দলকে অভিনন্দন জানায় এবং খেলোয়াড়, কোচ, আম্পায়ার, কর্মকর্তা, দর্শক ও স্পনসরসহ ফ্রেন্ডশিপ ক্রিকেট কাপের সাফল্যে অবদান রাখার জন্য সবার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। বাংলাদেশ ও বাহরাইনের মধ্যে বন্ধন আরও মজবুত করতে ভবিষ্যতে এরকম আরও অনেক নানামুখী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।