আপনার জিজ্ঞাসা
শবে বরাতের ইবাদত নিয়ে ইসলাম কী বলে?
নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসা অনুষ্ঠানের একটি পর্বে শবে বরাতের নামাজ-রোজা নিয়ে ইসলাম কী বলে সে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন এক দর্শক। অনুলিখনে ছিলেন মোহাম্মদ সাইফ আহমেদ।
প্রশ্ন : শবে বরাতের নামাজ-রোজা তথা ইবাদত নিয়ে ইসলাম কী বলে? শবে বরাত নিয়ে ইসলাম কী বলে?
উত্তর : ধন্যবাদ আপনার প্রশ্নের জন্য। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। কারণ আমরা জানি, শবে বরাত নিকটে। আসলে শবে বরাত বলতে আমাদের সমাজে যেটাকে বুঝানো হয় সেটা হলো—সাবান মাসের মধ্যে রজনী বা সাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতকে। এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই। সেটা হলো, শবে বরাত বলতে কোরআন ও হাদিসে কোনো নির্দিষ্ট ইবাদতের কথা আসেনি। যেহেতু এটি একটি ফারসি শব্দ সেহেতু কোরআনে আসাও সম্ভব নয়। এটিকে মূলত বলা হয়, লাইলাতুল সাবান। সাবান মাসের মধ্যরজনী। আর শবে বরাতের অর্থ হলো ভাগ্যের রজনী। একদল আলেম এই নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে থাকেন। তারা কোরআনের একটি আয়াতকে কেন্দ্র করে তারা শবে বরাত নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করে থাকেন। এসব একেবারে ভিত্তিহীন। এরপর বলব, যদি লাইলাতুল সাবানের রাতের কথাকে কেউ ফজিলতের রাত হিসেবে মেনেই নেন, এই রাতের সুনির্দিষ্ট আমল করেন, কিংবা এই রাতে সুনির্দিষ্ট নামাজ পড়েন, কিংবা সিয়াম রাখেন, প্রথা হিসেবেই নেন–এসব কিছু হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয়নি। শবে বরাত কেন্দ্রিক কোনো সিয়াম নেই। আর লাইলাতুল সাবান নিয়ে বললে বলব, প্রতিটি রাতের মতোই এটি একটি রাত্রী। প্রতিটি রাতেই আমাদের আল্লাহ আসমানে নেমে আসেন। এসে বলেন—’তোমাদের মধ্যে কেউ কি ক্ষমাপ্রার্থনাকারী কেউ আছে? আমি তাকে ক্ষমা করব। কিংবা কেউ কি হেদায়েদ হতে চায়? আমি তাকে হেদায়েত করব।’ সুতরাং বলব যে, কেউ যদি প্রতিনিয়ত রাতের নামাজ পড়েন তিনি প্রতিদিনের ন্যায় ব্যক্তিগত ইবাদত করতে পারেন। নফল ইবাদত করতে পারেন নিজের মতো। তাতে কোনো বাধা নেই। এই রাতে নিজের মতো করে ব্যক্তিগত ইবাদত করতে পারেন। এ ছাড়া কোনো নির্দিষ্ট ইবাদত নেই।