বাংলাদেশের ফিল্ডিং খারাপ হচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে!

ক্যারিবীয় সফরের প্রথম দিন ব্যাটাররা ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় দিনে বোলারদের সাফল্যে প্রশংসা পাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু এর মধ্যেও একটি বিষয় খুব আলোচনায়, ফিল্ডাররা কেন ব্যর্থ হচ্ছেন। গত দুই দিনে ফিল্ডাররা বেশ কিছু সহজ ক্যাচ মিস করায় তা নিয়ে সামলোচনা হচ্ছে।
প্রথম দিন ১০৩ রানে অলআউট হওয়ার পর সেদিন বিকেলে বাংলাদেশ তিনটি ক্যাচ ফেলে। দ্বিতীয় দিন সকালে বোলাররা আরও সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় সুযোগ নষ্ট হয়ে যায়। লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ বেশ ভালো ক্যাচ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অল্পতে থামিয়ে দেন। ইনিংসের শুরুতে সহজ সুযোগ নষ্ট না হলে স্বাগতিকদের স্কোর আরও কম হতে পারত।
গত দুই দিনে বাংলাদেশ পাঁচটি ক্যাচ ফেলেছে। আর জারমেইন ব্ল্যাকউড ৩৯ রানে এলবিডব্লিউ আউট হয়ে যেতেন যদি তারা থার্ড আম্পায়ারের কাছে আবেদন করত। কিন্তু তারা তা করেননি, ক্যারিবীয় ব্যাটার ৬৩ রান করেন।
ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট সর্বোচ্চ ৯৪ রান করেছিলেন। তিনি ০, ১৬, এবং ৬৩ রানের মাথায় বেঁচেছিলেন। এই একজন ব্যাটার যিনি ১১ বছর ধরে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্য বিস্তার করেছেন। তাঁকে আউট করার ক্ষেত্র অনেক সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। এদিকে বোনার মাত্র ৩৩ রান করলেও ব্র্যাথওয়েটের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৬২ রান যোগ করেন। তিনি ১৪ রানে এবং ২২ রানে আউট হতে পারতেন। স্লিপে ক্যাচ ধরতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত।
ইএসপিএনক্রিকইনফোর খবরে জানা গেছে, এ বছর সব ফরম্যাটেই বাংলাদেশের ফিল্ডিং খুব বাজে হচ্ছে, বিশেষ করে ক্যাচ ধরার ক্ষেত্র ব্যর্থতা দেখাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ক্যাচ ফেলেছে এক-তৃতীয়াংশ। ৮৪টি ক্যাচ নিয়েছে এবং ৩৯টি ফেলেছে। আর টেস্টে ৬৯টি সুযোগের মধ্যে ২৪টি ক্যাচ ফেলে দিয়েছে।
বাংলাদেশের হয়ে শান্ত, ইয়াসির আলী (চোটে আক্রান্ত) এবং লিটন দাস স্লিপে ফিল্ডিং করে থাকেন। কিন্তু গত তিন বছরে ১১টি সুযোগের মধ্যে পাঁচটি ক্যাচই ফেলে দিয়েছেন শান্ত। শুধু তাই নয়, শেষ ১৭ টেস্ট ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটি করেছেন তিনি।
যখনই বিষয়টি উঠে আসে, বিসিবি এবং টিম ম্যানেজমেন্ট নিরব থাকছে। ফিল্ডিং কোচ খুব কমই মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হন। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকজন ফিল্ডিং কোচ এসেছেন। রায়ান কুক চলে গেছেন। রাজিন সালেহকে একটি সিরিজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এখন শেন ম্যাকডারমট আছেন দায়িত্বে।
গত মার্চে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাদা বলের ম্যাচে নয়টি ক্যাচ ড্রপ করায় ফিল্ডারদের দুষেছেন।

এ সম্পর্কে ডমিঙ্গো বলেন, ‘আমরা উন্নতি করার চেষ্টা করছি। কিন্তু ফিল্ডারদের এই ব্যর্থতায় অনেক ক্ষতি হচ্ছে দলের।’
যদিও নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘ব্যাটিং বা বোলিংয়ে আপনার খারাপ দিন যেতে পারে, তবে আমাদের ফিল্ডিংয়ে আরও ধারাবাহিক হতে হবে। মিসফিল্ডিং দলের গতিকে নষ্ট করে। আমরা একটি ভালো ফিল্ডিং দল দেখতে চাই।’
জাতীয় দলের এই নির্বাচক আরও বলেন, ‘প্রশিক্ষণের সময় আমরা প্রচুর ফিল্ডিং করি। আমরা যখন ঘরের মাঠে বা বড় কোনো টুর্নামেন্টে খেলি, তখন মনস্তাত্ত্বিক চাপ সামলানো গুরুত্বপূর্ণ। আমি মনে করি আমরা সেই চাপ সামলাতে পারছি না। আমাদের সেরা কিছু ফিল্ডার ক্যাচ ফেলেছেন। চাপের সময় কীভাবে সামলাতে হয় তা নিয়ে কাজ করতে হবে, এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ নিতে হবে।’
অনেক টেস্ট দলের মতো বাংলাদেশও ডিআরএস নিয়ে লড়াই করেছে। আগের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক কেন এতগুলো রিভিউ নষ্ট করেছেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এবার সাকিব কি করেন সেটাই দেখার।