বাংলাদেশ সফরে অস্ট্রেলিয়ার তারুণ্যনির্ভর দল

মাইকেল ক্লার্ক, ব্র্যাড হ্যাডিন, ক্রিস রজার্স, রায়ান হ্যারিস, শেন ওয়াটসন—লম্বা তালিকা। তালিকাটা অস্ট্রেলিয়ার সদ্য বিদায়ী ক্রিকেটারদের। এঁদের মধ্যে ওয়াটসন শুধু টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। বাকি চারজন অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই। বাংলাদেশ সফরে যে অস্ট্রেলিয়া বেশ নতুন চেহারার দল নিয়ে আসতে যাচ্ছে, তা অনুমিতই ছিল।
হয়েছেও তা-ই। সোমবার ঘোষিত ১৫ জনের দলে নতুন মুখ দুজন। ৩০ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন পেসার অ্যান্ড্রু ফেকেটে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলার পুরস্কার হিসেবে বাংলাদেশে আসছেন ২২ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ক্যামেরন ব্যানক্রফটও।
এ মাসের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ড পত্রিকা জানিয়েছিল বাংলাদেশ সফরে মিচেল জনসন ও জশ হেজেলউডকে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে। আসছে মৌসুমে অতিরিক্ত ব্যস্ততার কথা মাথায় রেখে এই দুই পেসারকে ঠিকই বিশ্রাম দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকরা। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও লেগস্পিনার ফাওয়াদ আহমেদকে অবশ্য চোটের কারণে তাঁরা দলে রাখতে পারেননি।
চোট আর অবসরের মিছিল কয়েকজনের কপালও খুলে দিয়েছে। টেস্ট দলে ফিরেছেন জো বার্নস, প্যাট কামিন্স, উসমান খাজা, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও স্টিভেন ও’কিফে।
দলে অনেক পরিবর্তন এলেও এটাকে ইতিবাচক দিক হিসেবেই দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম নির্বাচক রডনি মার্শ, ‘অবসর, চোট, ছন্দ আর কন্ডিশন বিবেচনায় ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জে সফর করা দলের সঙ্গে এই দলের অনেক তফাত। তবে এই পরিবর্তন বাংলাদেশে যাওয়া খেলোয়াড়দের সামনে দুর্দান্ত সুযোগ এনে দিয়েছে। দলটা তারুণ্যনির্ভর। সাতজনের বয়সই ২৬ বছরের নিচে। দলের ১৫ জনের সামনেই নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার দারুণ সুযোগ। বিশেষ করে ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও অ্যান্ড্রু ফেকেটের কথা বলতে হবে। টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুতেই ভালো করে ভবিষ্যতের জন্য দলে জায়গা স্থায়ী করার চমৎকার সুযোগ দুজনের সামনে।’
গত মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৮৯৬ রান করেছিলেন ব্যানক্রফট। অন্যদিকে পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৭ উইকেট নিয়েছিলেন ফেকেটে। দুজনের মধ্যে আলাদা করে ব্যানক্রফটের প্রশংসা করলেন মার্শ, “অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে সাম্প্রতিক ভারত সফরে ক্যামেরনের খেলা সবাইকে মুগ্ধ করেছে। সে তরুণ, সাফল্যের জন্য ব্যগ্র এক খেলোয়াড়। দীর্ঘ দিনের জন্য সে আমাদের দলের একজন ভালো খেলোয়াড়ে পরিণত হতে পারে।’
দলের স্পিন-আক্রমণ নিয়েও সন্তুষ্ট অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক মার্শ, ‘যে কন্ডিশনের মুখোমুখি হওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে আমরা যাচ্ছি, আমার বিশ্বাস স্টিভেন ও’কিফে, নেইথান লিয়ন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে গড়া স্পিন-আক্রমণ তা আমাদের চাহিদা মেটাতে পারবে।’
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে অস্ট্রেলিয়া দল। ৯ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। টেস্ট সিরিজের আগে একটি তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া। ফতুল্লার খানসাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি হবে ৩ থেকে ৫ অক্টোবর।
অস্ট্রেলিয়া দল :
স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), অ্যাডাম ভোজেস, ক্যামেরন ব্যানক্রফট, জো বার্নস, প্যাট্রিক কামিন্স, অ্যান্ড্রু ফেকেটে, উসমান খাজা, নেইথান লিয়ন, মিচেল মার্শ, শন মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, পিটার নেভিল, স্টিভেন ও’কিফে, পিটার সিডল ও মিচেল স্টার্ক।