ভাভরিঙ্কার ‘নিউইয়র্ক’ জয়

নোভাক জোকোভিচের সঙ্গে তাঁর ‘শত্রুতা’ বেশ পুরোনো। ২০১৪ সালে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পথে কোয়ার্টার ফাইনালে জোকোভিচকে হারিয়েছিলেন স্ট্যান ভাভরিঙ্কা। গত বছর ভাভরিঙ্কার কাছেই ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে হেরে যাওয়ায় বছরের চারটি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের স্বপ্নপূরণ হয়নি জোকোভিচের। এবারের ইউএস ওপেনের ফাইনালেও বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় পরাস্ত ভাভরিঙ্কার কাছে। ৬-৭ (১/৭), ৬-৪, ৭-৫, ৬-৩ গেমে জিতে ক্যারিয়ারের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের আনন্দে মেতে উঠেছেন ভাভরিঙ্কা।
শুধু শিরোপাই জেতেননি, একটা ‘ইতিহাস’ও গড়েছেন সুইস কিংবদন্তি রজার ফেদেরারের স্বদেশি ভাভরিঙ্কা। গত ৪৬ বছরে ভাভরিঙ্কাই ইউএস ওপেনের পুরুষ এককে বয়োজ্যেষ্ঠ চ্যাম্পিয়ন। ১৯৭০ সালে ৩৫ বছর বয়সে নিউইয়র্ক জয় করে রেকর্ডটা গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার কেন রোজওয়াল। আর ভাভরিঙ্কার বয়স এখন ৩১ বছর। ২০০২ সালে পিট সাম্প্রাসের পর আর কোনো তিরিশোর্ধ্ব খেলোয়াড় ইউএস ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি।
তবে এমন দারুণ কীর্তি গড়ে শিরোপা জিতলেও ভাভরিঙ্কার মনে উচ্ছ্বাসের চেয়ে স্বস্তিই বেশি। খেলা শেষে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়কে হারাতে হলে আপনাকে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিতে হবে। আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হবে। এমন কি কষ্ট উপভোগও করতে হবে। আমার ধারণা, শারীরিক ও মানসিকভাবে এটাই আমার খেলা সবচেয়ে কষ্টকর গ্র্যান্ড স্লাম। তৃতীয় সেটের আগে পায়ের পেশিতে টান পড়েছিল। চতুর্থ সেটের সময় পায়ে বেশ ব্যথাও করছিল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি কোনো কিছু প্রকাশ করিনি।’
খ্যাতি আর সাফল্যে ভাভরিঙ্কার চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা জোকোভিচ এ নিয়ে সাতবার ইউএস ওপেনের ফাইনালে উঠে পাঁচবারই ব্যর্থ হলেন। প্রথম সেট টাইব্রেকারে জিতলেও এরপর প্রতিপক্ষের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের সঙ্গে পেরে ওঠেননি। একবার তো রাগের চোটে র্যাকেট আছড়ে ফেলে আম্পায়ারের হুঁশিয়ারিও শুনেছেন তিনি। তবে খেলাশেষে প্রতিপক্ষের প্রশংসায় ঠিকই মেতে উঠেছেন সার্বিয়ান তারকা, ‘স্ট্যান, এই জয় অবশ্যই তোমার প্রাপ্য। আজ ম্যাচ নির্ণায়ক মুহূর্তগুলোতে তুমিই ছিলে বেশি সাহসী। শিরোপা তাই প্রাপ্য তোমারই।’