সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থামল ৩১০ রানে

সিলেট টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৮৫ ওভারে ৩১০ রান করে বাংলাদেশ। দুই টেলএন্ডার তাইজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম মিলে দ্বিতীয় দিনে রান যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেবে, এটিই প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু, আজ বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকালের প্রথম বলেই টিম সাউদির বলে লেগ বিফোর হন শরিফুল। বাংলাদেশ অলআউট হয় ৩১০ রানে।
এর আগে প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষ হওয়ার এক ওভার আগেও ম্যাচ বাংলাদেশের অনুকূলে ছিল। পাঁচ বলের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটার মমিনুল হক ও মাহমুদুল হাসান জয়কে হারিয়ে ব্যাকফুটে যায় বাংলাদেশ। ১৮০ রানে দুই উইকেট থেকে ১৮৪ রানে চার উইকেট নেই স্বাগতিকদের। সেই যে ব্যর্থতার শুরু, তৃতীয় সেশনেও অব্যাহত থাকে সেটি। শেষ পর্যন্ত প্রথমদিনে অলআউট হয়নি বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৮৫ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১০ রান।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুটা দেখেশুনেই করেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। কিউই স্পিনারদের বুঝেশুনে মোকাবিলা করছিলেন তারা। তবে, ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে এজাজ প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন জাকির। এর আগে ১২ রান করেন তিনি।
জাকির আউট হলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে টেস্টে প্রথমবার দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। ক্রিজে এসেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালান। যেন ওয়ানডে ম্যাচের শেষ দিকে নেমে দলের রান বাড়ানোর কাজটা করছেন! অথচ, তিনি ভুলে গেলেন, সবে ওয়ানডাউনে নেমেছেন। আসল কাজ উইকেট ধরে রাখা। সেশন ধরে এগোনো।
সেটি না করে শান্ত খেললেন ঝড়ো ইনিংস। ৩৫ বলে দুই চার ও তিন ছক্কায় ৩৭ রান করে আউট হলেন গ্লেন ফিলিপসের নিরীহ এক ডেলিভারিতে। আপার ফুলটসে এগিয়ে এসে লং অনে শট মারেন শান্ত। সেটি কেন উইলিয়ামসনের ক্যাচে পরিণত হয়। এমন বলে উইকেট পাবেন, তা হয়তো ভাবেননি ফিলিপস নিজেও। উইলিয়ামসন ক্যাচ নেওয়ার পর মাথায় হাত দিয়ে অবিশ্বাসের হাসি হাসেন ফিলিপস।
তৃতীয় উইকেটে জয় ও মমিনুল হক দ্বিতীয় সেশনে লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশকে কক্ষপথে রাখেন। দুজনের ৮৮ রানের জুটিতে এই সেশনে বিপদ আসতে দেননি। কিন্তু, হঠাৎই ছন্দপতন। দলীয় ১৮০ রানে মমিনুলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন গ্লেন ফিলিপস। উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেলের ক্যাচে পরিণত হন মমিনুল। আউট হওয়ার আগে ৩৭ রান করেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ফিফটি হাঁকানো জয় এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতকের দিকে। ব্যক্তিগত ৮৬ রানে থামতে হয় তাকে। ১৬৬ বলে ১১ চারে ৮৬ রান করা জয়কে স্লিপে ডেরিল মিচেলের ক্যাচ বানান ইশ সোধি।
এরপর আর ক্রিজে থিতু হতে পারেননি কেউই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত শাহাদাত হোসেন দিপু ২৪, নুরুল হাসান সোহান ২৯ রান করে আউট হন। প্রথম দিনেই অলআউট হওয়ার শঙ্কা জাগে বাংলাদেশের। শেষ দিকে তাইজুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম মিলে বিকেলের বাকি সময় কাটিয়ে দেন। বাংলাদেশ প্রথম দিন শেষ করে ৩১০ রানে।
কিউইদের পক্ষে চার উইকেট নেন গ্লেন ফিলিপস। দুটি করে উইকেট পান আজাজ প্যাটেল ও কাইল জেমিসন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রথম ইনিংস শেষে বাংলাদেশ : ৮৫.১ ওভারে ৩১০/১০। (জয় ৮৬, জাকির ১২, শান্ত ৩৭, মমিনুল ৩৭, মুশফিক ১২, দিপু ২৪, মিরাজ ২০, সোহান ২৯, নাঈম ১৬, তাইজুল ৮*, শরিফুল ১৩; সাউদি ১৪.১-২-৪৩-১, জেমিসন ১৭-৫-৫২-২, প্যাটেল ২৪-১-৭৬-২, সোধি ১৪-১-৭১-১, ফিলিপস ১৬-১-৫৩-৪)